মহীসঞ্চারণ তত্ব (Drifting of Continent) Continental Drift Theory
আজকের আলোচনার বিষয় হল –
মহীসঞ্চারণ তত্ব (Drifting of Continent)
=> প্যাঞ্জিয়া : সাধারণত পৃথিবীতে বর্তমান যে সমস্ত মহাদেশ সৃষ্টি হয়েছে তারা প্রাচীন কালে একটি একক ছিল ( সব মহাদেশ গুলি একসঙ্গে একটি বড়ো একক অতিমহাদেশীয় একক হিসাবে অবস্থান করত ) এই একক বড়ো স্থলভাগ বা অঞ্চলটিকেই বলা হয় প্যাঞ্জিয়া ।
=> প্যানথালসা : প্যানথালসা হল প্যাঞ্জিয়া ছাড়া বাকি সামগ্রিক মহাসাগরীয় অঞ্চলটি। অর্থাৎ প্রশান্ত, ভারত , আটল্যাণ্টিক সহ বাকি মহাসাগরীয় অঞ্চলে ও পাত একীভূত ছিল। এই অতি বৃহৎ জলভাগের অঞ্চলটি হল প্যানথালসা।
বিচ্ছিন্নকরণ ও মহাদেশ সৃষ্টি :
পরবর্তী পর্যায়ে ভূ অভ্যন্তরের শক্তির প্রভাবে মহাদেশের সামগ্রিক বড়ো অংশটি একাধিক খন্ডে বিভক্ত হয়ে পড়ে। এবং মহাদেশগুলি ক্রমশ অ্যাসথেনোস্ফিয়ারের পরিচলন স্রোতের প্রভাবে সরতে থাকে মহাসাগরীয় অঞ্চলের মধ্যে দিয়ে। অন্যদিকে মহাসাগরীয় পাতের চলন হতে থাকে। এই ভাবে প্রতিসরন ও বিচ্ছিন্নকরনের মাধ্যমে মহাদেশ গুলি তার বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়ে থাকে। মহাদেশ গুলির মধ্যভাগের জলরাশি সমন্বিত মহাসাগরীয় পাত সমন্বিত অঞ্চল মহাসাগর সৃষ্টি করে থাকে। মহাসাগরের মধ্যদিয়ে মহাদেশীয় পাতের বিচলন হলো মহীসঞ্চারণ তত্ব।
মহীসঞ্চারণ তত্বের প্রমাণ
জিগ স ফিট :
সাধারণত খুবই মজার ব্যাপার কিছু কিছু মহাদেশের প্রান্তভাগ দেখলে বোঝাই যায় একসময় ওই মহাদেশের প্রান্ত অন্য কোনো মহাদেশের প্রান্তের সঙ্গে যুক্ত ছিল। যেমন : একটি বিস্কুট ভেঙে আবার জোড়া লাগালে জুড়ে যায় প্রাথমিক ভাবে। এই ধরণের খাঁজ বিপরীত মুখী মহাদেশের সীমান্তে লক্ষ করা যায়। এই খাজ গুলোর মেলবন্ধন ও খাজগুলোকে বলে জিগ স ফিট।
জীবাশ্ম :
দুটি পরস্পর বিপরীত দিকে থাকা মহাদেশের প্রান্তবর্তী বা পার্শ্ববর্তী কিছু অঞ্চলের জীবাশ্মের প্রকৃতি অনেকটা একরকম বা বেশ কিছু মিল থাকে। এটি যে সেই অঞ্চল ও মহাদেশের সঙ্গে বিপরীত দিকের মহাদেশ একসময় জোড়া ছিল তার সপক্ষে প্রমাণ দেয়। দ আমেরিকা ও আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলের কিছু জায়গায় সরীসৃপ সাইনোগ্যানথাসের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে এটি জীবাশ্মগত সদৃশতা। আন্টার্টিকা ও অষ্ট্রেলিয়ার কিছু জায়গায় গ্লসিওপটেরি নামক উদ্ভিদের জীবাশ্ম পাওয়া গেছে। কিছু কিছু মহাদেশ সমজীবাশ্ম অঞ্চল দ্বারা যূক্ত ।
শিলার প্রকৃতি ও শৈলশিরার প্রকৃতি :
দুটি বিপরীত দিকে অবস্থিত মহাদেশের শিলাস্তরের গঠনপ্রকৃতির সদৃশতা থাকে। এছাড়া শৈলশিরার প্রকৃতিতেও সদৃশ্য লক্ষ করা যায়।
=> পাত সংস্থান তত্ব :
সাধারণত বর্তমান পৃথিবী একাধিক পাতে বিভক্ত এই পাতাগুলি গুরুমণ্ডলের পরিচলন স্রোত দ্বারা চলনশীল । পাত গুলির চলন থেকে মনে হয় একটি অঞ্চল থেকেই পাতগুলি নানা দিকে ছড়িয়ে পড়ে।
অন্যদিকে আবার পরিচলন স্রোতের নিম্নগামী অঞ্চলে বিপরীত ধর্মী দুটি পাত যুক্ত হয়। যার ফলে আটলান্টিক মহাসাগর বড়ো হচ্ছে প্রতিসারী পাত সীমান্তে অবস্থিত বলে। প্রশান্ত মহাসাগরে এশিয়ার পূর্ব দিক এবং আমেরিকার পশ্চিম দিক অভিসারী হচ্ছে তাই আয়তন কমছে। আর এই চলন থেকে বোঝা যায় একটি নির্দিষ্ট সময় একটি মূল অঞ্চল থেকেই চলন শুরু হয়েছিল এই মূল অঞ্চল ওয়েগনারের কল্পিত প্যাঞ্জিয়া। মহীসঞ্চারণ তত্বের বড়ো প্রমাণ তাই পাত সংস্থান তত্ব।
Many People search as these keywords like that মহীসঞ্চারণ তত্বের প্রমাণ জিগ স ফিট,মহীসঞ্চারণ তত্ব (drifting of continent),বিচ্ছিন্নকরণ ও মহাদেশ সৃষ্টি,মহীসঞ্চরণ তত্ত্ব টি চিত্র সহকারে ব্যাখ্যা করো,মহীসঞ্চরণ তত্ত্ব ( অষ্টম শ্রেণী),একাদশ শ্রেণী ভূগোল মহীসঞ্চরণ তত্ত্ব,মহিসঞ্চরণ এর প্রমান,distribution of oceans and continents,প্যাঞ্জিয়া,প্যানথালসা,শিলার প্রকৃতি ও শৈলশিরার প্রকৃতি,পাত সংস্থান তত্ব,continental drift theory in bengali,alfred wegeners continental drift theory in bengali,