পাত সংস্থান তত্ত্ব , Plate Tectonic Theory in Bengali, প্লেট টেকটনিক মতবাদ, ভূত্বকীয় পাত সংস্থান তত্ত্ব, পাত সঞ্ছালন তত্ত্বের ব্যাখ্যা - এই বিষয় সম্পর্কে আজকে আমরা বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করবো । এই পোস্টে আমরা আলোচনা করবো নিম্নের বিষয়াবলী সম্পর্কে যেমন -
আজকের আলোচনার বিষয় ( Today's Discussion Tropic)
প্রবক্তাগণ (The Founders Of This Theory )
পাতের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য(Defination and characteristics Of Plates)
সিয়াল ও সীমায (Sial And Sima)
মূল বক্তব্য (Main Theme or Concept of Plate Tectonic Theory )
7 টি বড় পাত (Large Plate) ,
8 টি মাঝারি পাত (Middle Plate),
20 টি ছোট পাত (Small Plate),
পাতের চলন,পাত সীমানা,ও ভূগাঠনিক বৈশিষ্ট্য:
প্রতিসারী পাত সীমানা ,
অভিসারী পাত সীমানা,
নিরপেক্ষ পাত সীমানা,
অধঃপাত মণ্ডল বা Subduction Zone
বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধ পর্যন্ত মহাদেশ ও মহাসাগরগুলির স্থায়িত্ব পর্বতমালার গঠন, সমুদ্রবক্ষের বিস্তৃতি,অগ্ন্যুৎপাত প্রভৃতির মতো ভূতাত্ত্বিক ঘটনাবলির আংশিক ব্যাখ্যা বেকন,ওয়েগনার প্রমুখ ভূবিজ্ঞানীদের গবেষণাপত্র থেকে পাওয়া গেলেও,এই তথ্যগুলি সম্পূর্ণ সন্তোষজনক ব্যাখ্যা দিতে পারেনি।
পৃথিবীব্যাপী ভূত্বকীয় ও পাতের চলন,সংঘর্ষ,চ্যুতি, ভূমিকম্প,অগ্নুৎপাত,মহাদেশ-মহাসাগর বন্টন,পর্বত শৈলাশিরা সৃষ্টি ইত্যাদি পাত সংক্রান্ত আলোচনাকে একত্রে পাত ভূগাঠনিক তত্ত্ব বলে।
প্রবক্তাগণ:-
তত্ত্বটি কোন একক তত্ত্ব নয়,বিভিন্ন ধারণাকে একসূত্রে গেঁথে তত্ত্বটি তৈরি,এটি জেফ্রির তাপীয় সংকোচন তত্ত্ব,ড্যালির মহাদেশ বিচলন তত্ত্ব,হোমসের পরিচলন স্রোত তত্ত্ব,ওয়েগনারের মহাদেশ সঞ্চালন তত্ত্ব এবং সমুদ্রবক্ষের বিস্তৃতি তত্ত্বের ওপর প্রতিষ্ঠিত।১৯৬৫ সালে কানাডীয় ভূ-পদার্থবিদ জে তুজো উইলসন সর্বপ্রথম নেচার পত্রিকায় পাত ও পাত ভূগঠনিক শব্দ ব্যবহার করেন।
এরপরে,
ম্যাকেঞ্জি,পার্কার,আইজকস,সাইকস,মরগ্যান, অলিভার প্রমুখ ভূবিজ্ঞানী এই তত্ত্বকে সমৃদ্ধ করেন।
১৯৬৮ সালে ফরাসি বিজ্ঞানী জেভিয়ার লা পিঁচো ভূগঠন তত্ত্বকে পরিপূর্ণতা দান করেন।পিঁচোকে পাত ভূগঠণ তত্ত্বের জনক বলা হয়।
পাতের সংজ্ঞা ও বৈশিষ্ট্য(Defination and characteristics):
সংজ্ঞা:-
সিয়াল ও সীমায় গঠিত পৃথিবীর অশ্মমন্ডলীয় স্তর ছোট-বড় কতগুলি পাতলা,অনমনীয় ও কঠিন চলমান খন্ডে বিভক্ত।
যাদেরকে সাধারণভাবে প্লেট বা পাত বলে।
পৃথিবীব্যাপী ভূত্বকীয় পাতের আপেক্ষিক চলন, বিরুপণ,বিবর্তন এবং ফলাফল হিসাবে মহাদেশগুলির ভৌগোলিক অবস্থানের পরিবর্তন ও সমুদ্রবক্ষের আকার-আকৃতির পরিবর্তন ও পাত সীমানায় ভূগাঠনিক ক্রিয়াকে একত্রে পাত সংস্থান বলে।
বৈশিষ্ট্য:-
১. ভূত্বকীয় অংশ: পাতগুলি মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় এই দুই ভাগে বিভক্ত।
২.বেধ: পাতগুলির গভীরতা সমান নয়।মহাসাগরীয় পাতের গড় গভীরতা প্রায় 70 কিমি।কিন্তু মহাদেশীয় পাতের গড় গভীরতা প্রায় 150 কিমি।
৩.আয়তন: পাতসমূহের বিস্তার বা আয়তন প্রায় 1 লক্ষ বর্গ কিমি থেকে প্রায় 100 কোটি বর্গকিমি পর্যন্ত হতে পারে, এজন্য পাত গুলি বড়-মাঝারি-ছোট হয়।
৪.বিস্তার: পাতগুলি মহাদেশ ও সমুদ্রের উভয়ের অংশ,
অথবা শুধু মহাদেশ বা শুধু মহাসাগর নিয়ে গঠিত।
৫.গতিবেগ: পাতগুলি স্থির নয়।সর্বদা সঞ্চরণশীল।ভিন্ন ভিন্ন গতিবেগে পাতগুলি পরস্পরের দিকে বা বিপরীতে অগ্রসর হয়।
৬.প্রান্তভাগের প্রকৃতি: চলমান পাতের দুটি সীমানা থাকে।
মূল বক্তব্য:-
ভূত্বক চ্যুতিরেখা দ্বারা বিচ্ছিন্ন এবং ক্ষুব্ধমন্ডলের উপর ভাসমান 7 টি বড়,8 টি মাঝারি,ও 20 টি ছোট পাতের সমন্বয়ে গঠিত।
7 টি বৃহৎ পাত হলো-
প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাত,আফ্রিকা পাত,ইউরোশীয় পাত,ইন্দো অস্ট্রেলিয় পাত,উত্তর আমেরিকা পাত দক্ষিণ আমেরিকা পাত, অ্যান্টার্কটিকা পাত।
8 টি মাঝারি পাত হলো-
নাজকা পাত,আরবীয় পাত,কোকো পাত,ভারতীয় পাত,ফিলিপিন্স পাত,স্কোশিয়া পাত,ক্যারিবিয়ান পাত,জুয়ান দ্যা ফুকো পাত।
20 টি ক্ষুদ্র পাত হলো-
মাদাগাস্কার পাত,সোমালি পাত,দক্ষিণ স্যান্ডউইচ পাত,পানামা পাত,অ্যাড্রীয়াটিক পাত,আনাতোলিয়া পাত,বার্মা পাত,ইরানীয় পাত, ওকিগাওয়া পাত,ইয়াংসি পাত,শ্রীলঙ্কা পাত,টোঙ্গা পাত,গ্রীনল্যান্ড পাত,গ্যালাপাগোস পাত।
(খ)পাতের চলন,পাত সীমানা,ও ভূগাঠনিক বৈশিষ্ট্য:
ম্যাগমার পরিচলন স্রোত,পাতের নিমজ্জনজনিত টান,অভিকর্ষজ টান,ম্যাগমার উত্থানের কারণে পাতগুলির তিন ধরনের চলন ও পাতসীমানা গঠিত হয়।
যথা-
প্রতিসারী,অভিসারী,নিরপেক্ষ সীমানা এই সীমানাতে নানা ভূমিরূপ গড়ে ওঠে ও ভূমিকম্প হয়।
(অ)প্রতিসারী বা অপসারী চলন(DIVERGENT MOVEMENT):
যে সীমানা বরাবর ম্যাগমার ঊর্ধ্বমুখী স্রোতের প্রভাবে দুটি পাত বিপরীত দিকে পরস্পর থেকে দূরে সরে যায় তাকে প্রতিসারী পাত সীমানা বলে। ম্যাগমা নির্গত হয়ে নতুন ভূত্বক গঠিত হয়।তাই এই পাত সীমানাকে গঠনকারী পাত সীমানাও বলে।
প্রতিসারী পাত সীমানা:-
পাতের চলনে পরিচলন স্রোতের ভূমিকা:-
পৃথিবীর
উপরি পৃষ্ঠের ভূ-ত্বকীয় অংশ বা পাত গুলি রয়েছে তা গুরুমন্ডলের
অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারের উপর ভাসমান অবস্থায় রয়েছে এবং এই পাত গুলি শুধুমাত্র
ভাসমান অবস্থায় নেই, এগুলি চলনশীল অবস্থায়ও রয়েছে। পাত গুলির চলনের কারণ কী
- সেই সম্পর্কে আমাদের মনে প্রশ্ন উদিত হয়। পাতের চলনের কারণ সম্পর্কে
বিভিন্ন ব্যাখ্যা উপস্থিত থাকলেও সবচেয়ে গ্রহন যোগ্য কারণ হল আর্থার হোমসের
পরিচলন স্রোত মতবাদ।
এই
পরিচলন স্রোত মতবাদ অনুসারে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারে অবস্থিত তেজস্ক্রিয়
পদার্থের উপস্থিতির জন্য প্রচুর তাপ নির্গত হয়। এই তাপ গুলি স্রোতের আকারে
প্রবাহিত হয়ে অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারে পরিচলন প্রকোষ্ঠের সৃষ্টি হয়। এই ভাবে
পাশাপাশি অবস্থিত দুটি পরিচলন প্রকোষ্ঠের মধ্যে অবস্থিত উষ্ণ স্রোত গুলি
ঊর্ধ্বগামী হয়ে শিলামন্ডল পর্যন্ত পৌঁছে কখনো কখনো পরস্পরের দিকে অগ্রসর
হয় আবার কখনো কখনো পরস্পরের বিপরীত দিকে অগ্রসর হয়।
যখন
পরিচলন স্রোত গুলি পরস্পরের দিকে বা অভিমুখে অগ্রসর হয়, তখন তার ওপরে
অবস্থিত ভূখণ্ড বা পাত গুলি পরস্পরের দিকে অগ্রসর হয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়
অর্থাৎ অভিসারী পাত সীমানার সৃষ্টি করে।
আবার যখন দুটি পরস্পরের বিপরীত মুখী পরিচলন স্রোত পাশাপাশি অবস্থান করে তখন তার ওপরে অবস্থিত ভূখণ্ড গুলিতে প্রচন্ড টানের ফলে পরস্পরের বিপরীত দিকে প্রসারিত হয়ে প্রতিসারী পাত সীমানার সৃষ্টি করে। অর্থাৎ আর্থার হোমসের এই পরিচলন স্রোত মতবাদ পাতের চলনের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ব্যাখ্যা দিতে সক্ষম।
এ ছাড়াও এখানে আলছনা করা হয়েছে নিম্নের বিষয় সম্পর্কে যেমন -
- পাত সংস্থান তত্ত্ব - Plate Tectonic Theory | Geo-Tactonics
- ভূত্বকীয় পাত সংস্থান তত্ত্ব
- পাত সংস্থান তত্ত্ব এর সমস্ত তথ্য | plate tectonic theory
- প্লেট টেকটনিক তত্ত্ব
- পাতসংস্থান তত্ত্ব (Plate Tectonic Theory)
- পাত সংস্থান তত্ত্ব কী?
- পাত সংস্থান মতবাদ ,
Many people search as these keywords like that plate tectonics theory,plate tectonic theory in bengali,plate tectonics,plate tectonic theory,plate tectonic,hs plate tectonic theory,plate tectonic theory upsc,lession of plate tectonic theory,theory of plate tectonics,class 11 geography plate tectonic theory,tectonic plates,plate tectonic theory in hindi,class 8 plate tectonic theory in bengali,plate tectonics (literature subject),plate tectonic theory class 7,plate tectonic theory class 9