Type Here to Get Search Results !

সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি(seafloor spreading) | সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি তত্ব,একাদশ শ্রেণী ভূগোল | সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি সংক্রান্ত প্রমাণ

সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি(seafloor spreading)

 আজকের আলোচনার বিষয় হল (Today's Discussion Tropic)

  • পূর্ব ধারণা (Fore Concept)
  • মূল বক্তব্য(Main Concept Of Sea floor spreading)
  • সমুদ্র বক্ষের বিস্তারের প্রক্রিয়া (Process Of Seafloor Spreading) 
  •  তাপ সৃষ্টি(Origin Of Heat)

  • পরিচলন স্রোতের উদ্ভব(Origin Of Convectional Currents)

  • মহাদেশের স্থানান্তর (Continental Transport)

  • সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি সংক্রান্ত প্রমাণ (Evidence of Seafloor Spreading )

  • নবীন মহাসাগরীয় ভূত্বক গঠন ও সমুদ্র বক্ষের বিস্তার (New Oceanic Land's distribution)

  • পুরাতন মহাসাগরীয় ভূত্বকের বিন্যাস (Old Oceanic Land's distribution)
  • উদাহরণ(Examples Of Seafloor Spreading)

 

1960 সালে মার্কিন ভূবিজ্ঞানী হ্যারি হ্যামন্ড হেস সমুদ্রবক্ষের সম্প্রসারণের ধারণা দেন।1962 সালে অধ্যাপক History of Ocean Basin বইটিতে মতবাদটি প্রকাশ করেন।
পূর্ব ধারণাঃ- 
ফ্রান্সিস বেকন এর আটলান্টিক মহাসাগর সৃষ্টি,ওয়েগনার এর মহাদেশীয় সঞ্চালন,
আর্থার হোমসের তাপীয় পরিচালন স্রোত ইত্যাদি ধারণা হ্যারি হেসকে নতুন ভূগাঠনিক ধারণা তৈরিতে উৎসাহিত করে।
 
মূল বক্তব্য(Main Concept Of Sea floor spreading):-
১.হোমস এর 'পরিচলন স্রোত তত্ত্ব' এর ভিত্তিতে তিনি বলেন ক্ষুব্ধমন্ডলে ম্যাগমার পরিচলন স্রোতের ঊর্ধ্বমুখী অংশে মহাসাগরীয় ভূত্বক ফেটে বা গলে গিয়ে অসংখ্য ফাটল ও চ্যুতি রেখা সৃষ্টি হয়।
 
২.লক্ষ লক্ষ বছর ধরে ওই ফাটল বরাবর অবিরাম ব্যাসল্ট জাতীয় লাভা নির্গত হয়ে সামুদ্রিক ভূত্বকের উপর সঞ্চিত হয়ে মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা সৃষ্টি হয়।পরে পরে সমুদ্র বক্ষের বিস্তার ঘটতে থাকে,ম্যাগমা নির্গমনের সময় প্রবল চাপে ভূত্বক পাশের দিকে বিস্তার লাভ করে এবং মাঝের ফাঁকা অংশে লাভা জমে নতুন ভূত্বক সৃষ্টি হয়।
 
৩.এর ফলে মহাসাগরের দুদিকের সীমানায় অবস্থিত মহাদেশীয় ভূত্বক পরস্পর থেকে ক্রমশ দূরে সরে যেতে থাকে।
 
৪. সমুদ্র তলদেশের এই প্রসারের সঙ্গে পুরানো ভূত্বকীয় অংশের বিনাশ ঘটে।
তার মতে, পরিচলন স্রোতের নিম্নমুখী বাহু, বরাবর মহাসাগরীয় ভূত্বক অংশে ঢুকে যায়। তাই কনভেয়ার বেল্টের মতো সামুদ্রিক শৈলশিরা থেকে বাইরের দিকে বিস্তার লাভ করে প্রান্তভাগে সামুদ্রিক খাতে শেষ হচ্ছে।
সমুদ্র বক্ষের বিস্তারের প্রক্রিয়া:-
১.তাপ সৃষ্টি:
হ্যারি হেসের মতে ভূগর্ভে 100 থেকে 2900 কিলোমিটার গভীরতায় অবস্থিত গুরুমন্ডলে তেজস্ক্রিয় পদার্থের প্রভাবে প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি হয় যেটি সমুদ্র তলদেশের সম্প্রসারণ এর একটি প্রধান কারণ।
 
২.পরিচলন স্রোতের উদ্ভব:
ভূগর্ভস্থ তাপ ভূগর্ভ থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করে ফলে গুরুমন্ডলে পরিচলন স্রোতের সৃষ্টি হয়।পরিচলন স্রোতের ঊর্ধ্বমুখী প্রবাহ মহাসাগরের তলদেশে লাভা যোগান দেয় ও মধ্য সাগরীয় শৈলশিরা গড়ে তোলে।
 
৩.মহাদেশের স্থানান্তর:
মধ্য মহাসাগরীয় শৈলশিরা থেকে পরিচলন স্রোতের অনুভূমিক ও বহির্মুখী প্রবাহ শৈলশিরার দুপাশে অবস্থিত মহাদেশীয় ভূখণ্ডকে দুপাশে ঠেলে সরিয়ে দেয়।
 
৪.নবীন মহাসাগরীয় ভূত্বক গঠন ও সমুদ্র বক্ষের বিস্তার:
মহীসঞ্চরণ এর ফলে মধ্য মহাসাগরীয় শৈলশিরার দুপাশে নতুন মহাসাগরের তলদেশ তৈরি হয় ও মহাসাগরের তলদেশ ক্রমশ সম্প্রসারিত হতে থাকে।
 
৫.পুরাতন মহাসাগরীয় ভূত্বকের বিন্যাস:
নতুন মহাসাগরীয় ভূত্বক মধ্য মহাসাগরীয় শৈলশিরা থেকে দুপাশে যত সম্প্রসারিত হয়, পুরাতন মহাসাগরীয় ভূত্বক তত মহাসাগরের প্রান্তে অবস্থিত সমুদ্রখাতের মধ্যে অনুপ্রবেশ করে এবং ভূগর্ভে বিনষ্ট হয়।
 
উদাহরণ:- আটলান্টিক মহাসাগরের তলদেশের গঠন ও বিস্তার।
সমুদ্র বক্ষের বিস্তারের প্রধান দুটি কারণ হলো~
A.পরিচলন স্রোত B.সঞ্চরণশীল পাত
সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি সংক্রান্ত প্রমাণ[Evidence of seafloor spreading]:-

১.মহাসাগরের তলদেশে পেরিডোটাইট নামক আগ্নেয় শিলার মধ্যে সারপেন্টাইন নামক নিজের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।বিজ্ঞানীদের মতে খনিজের কিছু উপাদানের জোগান আসে ভূগর্ভের গুরুমন্ডল থেকে।
 
২.1966 সালে সামুদ্রিক ভূত্বকের আগ্নেয় শিলার নমুনা থেকে RADIOMATRIC পদ্ধতিতে শিলার বয়স নির্ধারণ করা হয়।
 
এই পদ্ধতিতে প্রমাণিত হয় সামুদ্রিক শৈলশিরার শীর্ষদেশের ভূত্বক নবীন ও তলদেশের শিলা প্রাচীন।
 
৩.মার্কিন US নেশনাল সাইন্স ফাউন্ডেশন 1968 সালে JOIDES নামক প্রকল্প গ্রহণ করে।সংস্থাটি  গ্লোমোর চ্যালেঞ্জার নামক জাহাজ দ্বারা সংগৃহীত আটলান্টিক মহাসাগরের নমুনা পরীক্ষা করে দেখে যে মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরা থেকে উপকূলের দিকে গভীরতা ও বয়স বৃদ্ধি পায়।
 
৪. মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরাতে নতুন ভূত্বক সৃষ্টি হওয়ায় সেখানে পিলেজিক উজের অবক্ষেপ নেই কিন্তুু দূরবর্তী প্রাচীন ভূত্বকে পিলেজিক উজ সঞ্চিত হয়েছে।
৫. মধ্য মহাসাগরীয় শৈলশিরার দুপাশে সমান দূরত্বে সমান চরিত্রের ভূচৌম্বকীয় প্রভাব লক্ষ্য করা যায়।
এতে প্রমাণিত হয় যে মহাসাগরীয় শৈলশিরার দুপাশে সমুদ্র তলদেশের সম্প্রসারণ এর হার সমান।
 
৬. আটলান্টিক মহাসাগরীয় শৈলশিরা এবং উত্তর আটলান্টিকের ভূত্বকের 2-3 কিলোমিটার গভীর এলাকা থেকে শিলার যে নমুনা বিজ্ঞানীরা সংগ্রহ করেছেন,তাতে প্রমাণিত হয়েছে যে উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরীয় ভূত্বকের নিচে 2-3 কিলোমিটার গভীরতায়  তীব্র তাপপ্রবাহ আছে।এতে বোঝা যায় যে গুরুমন্ডল থেকে তাপের ঊর্ধ্বমুখী স্রোত আছে,ফলে ক্রমাগত ভূ-পৃষ্টের দিকে উঠে আসছে যা সমুদ্র তলদেশের সম্প্রসারণ এর জন্য জরুরী।
 
৭.1971 সালে ফেমাস (French American mid ocean undersea study)প্রকল্পে মধ্য আটলান্টিক শৈলশিরার উত্তর ভাগে দুই থেকে তিন কিমিঃ গভীরে খনন করে নমুনা সংগ্রহ করা হয়।
ভূত্বকের নিচে তীব্র তাপপ্রবাহ,ম্যাগমা চেম্বার,শৈলশিরার সমান্তরাল ফাটল ইত্যাদির উপস্থিতি জানা যায়।এটি সামুদ্রিক ভূত্বকের প্রসারণশীলতা সুস্পষ্ট প্রমাণ।
 
৮. মার্কিন অধ্যাপক J T WILSON 1965 সালে পাতসংস্থান তত্ত্বে বলেন,প্রসারণশীল ভূখণ্ড বা পাত অক্ষাংশ বরাবর সরে যাওয়ার ফলে মধ্য সামুদ্রিক শৈলশিরার শীর্ষদেশের নতুন শিলায় টান পড়ে চ্যুতি ও সংস্র উপত্যকা সৃষ্টি হয় এবং সমুদ্রবক্ষ চ্যুতিরেখা বরাবর সমকোণে দুপাশে সরে গিয়ে ট্রানসফর্ম চ্যুতির সৃষ্টি করে।
 
৯. মহাসাগরের উভয় দিকের উপকূল ও মহীঢালের একই রকম আকৃতি ও উপকূল অঞ্চলে জীবাশ্মের উপস্থিতি প্রমাণ করে অঞ্চলগুলি এক সময় একই স্থানে অবস্থিত ছিল এবং পরে সমুদ্রতল সৃষ্টির ফলে তারা সরে গেছে।
 
১০.মহাসাগরের তলদেশে গায়ট নামে এক ধরনের চ্যাপ্টা মাথার পাহাড় বা আগ্নেয়গিরি আছে।বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে মহাসাগরের তলদেশ সম্প্রসারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে গায়ড গুলিও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত হয়েছে।
 
১১.ভূ বিজ্ঞানীরা লক্ষ্য করেছেন যে ভূমিকম্পের কেন্দ্র গুলি সব সময় একই গভীরতায় অবস্থান করে না সমুদ্র খাতে ভূমিকম্পের কেন্দ্র গভীরে অবস্থান করে অথচ মধ্য সাগরীয় শৈলশিরায় ভূমিকম্পের কেন্দ্র গুলি অগভীর।
 
১২.অভিকর্ষ বিচ্যুতি:মহাসাগরীয় ভূত্বক মহীখাত অংশে অধঃপাত বলয় বরাবর অ্যাস্থেনোস্ফিয়ারে প্রবেশ করে গলে গিয়ে অপেক্ষাকৃত হালকা শিলার সাথে মিশে ঘনত্ব হ্রাস পায়।ফলে মহীখাত অংশে শিলার ধনাত্মক অভিকর্ষের বদলে ঋণাত্মক হয়।
 
 
 
 

 Many People search as these keywords like that সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি,sea floor spreading,sea floor spreading // সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি,সমুদ্র বক্ষের বিস্তার,seafloor spreading theory,সমুদ্র বক্ষের প্রসার,seafloor spreading,সমুদ্র বক্ষ বিস্তারের কারণ,sea floor spreading theory,seafloor spreading theory| সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি তত্ব,সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি তত্ব,একাদশ শ্রেণী ভূগোল সমুদ্র বক্ষের বিস্তৃতি,what is seafloor spreading,proofs of sea floor spreading,causes of sea floor spreading

Post a Comment

0 Comments

Top Post Ad

Below Post Ad