বায়ুমণ্ডল কাকে বলে ? - বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস | Layers of the Atmosphere in Bengali | বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও | বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তর PDF । | মাধ্যমিক ভুগোল | ২ অধ্যায় বায়ুমণ্ডল ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল, মেসোস্ফিয়ার, আয়োনোস্ফিয়ার, এক্সোস্ফিয়ার, এবং ম্যাগনেটোস্ফিয়ার
বায়ু মণ্ডল ভূগোলের একটি গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় । এখন আমরা বায়ু মণ্ডল সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করবো - নিম্নের বিষয়ে আজকের আলোচনা
- বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস | মাধ্যমিক ভুগোল | অধ্যায় বায়ুমণ্ডল
- বায়ুমণ্ডল কাকে বলে ? বায়ুমণ্ডলের কয়টি স্তর? | Atmosphere and It's Layer
- বায়ুমণ্ডল কাকে বলে? বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস? বায়ুমণ্ডলের প্রয়োজনীয়তা
- বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস ও তাদের বর্ণনা
- বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তর PDF | Layers of the Atmosphere
- বায়ু মণ্ডলের স্তর বিন্যাস || Layers of the atmosphere
- বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও
- বায়ুমণ্ডলের উপাদান কী কী এবং কোন উপাদানের পরিমাণ কত?
- বায়ুমণ্ডল কাকে বলে ? ( বায়ুমণ্ডল বলতে কি বোঝায় ) (What is Atmosphere in Bengali)
বায়ুমণ্ডলের সংজ্ঞা ( Definition of Atmosphere in Bangla ):
- ভূ-পৃষ্ঠের চারপাশ যে বায়বীয় আবরণ দ্বারা বেষ্টিত রয়েছে তাকেই সহজ ভাষায় বলা হয় বায়ুমণ্ডল। আমরা জানি যে, সৌরজগতের একমাত্র বাসযোগ্য গ্রহ পৃথিবী এবং মানুষ, প্রাণি অর্থাৎ জীবজগতের স্বাভাবিকভাবে বেঁচে থাকার জন্য এই বায়ুমণ্ডল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। মূলত ভূ-পৃষ্ঠ থেকে উর্ধ্ব দিকে যে বায়বীয় আস্তরণ তাই বায়ুমণ্ডল নামে পরিচিত এবং এই মণ্ডলটি নানা প্রকার গ্যাসীয় উপাদান দ্বারা গঠিত। পৃথিবীর আকর্ষণে আকৃষ্ট হয়ে এ বায়ুমণ্ডল পৃথিবীর সঙ্গে আবর্তিত হচ্ছে। তবে বায়ুমণ্ডল কঠিন ভূমির সাথে সমানভাবে চলতে পারে না বরং কিছুটা পশ্চাতে পড়ে থাকে।
বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস (Layers of Atmosphere) :
(ক) উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস,
(খ) উষ্ণতার তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস ।
(ক) উপাদানগত তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস (Layers of Atmosphere based on Chemical Composition) :
বায়ুমণ্ডলের উপাদান ও রাসায়নিক গঠন বিন্যাসের তারতম্য অনুসারে বায়ুমণ্ডলকে প্রধানত দুটি স্তরে ভাগ করা হয় । যথা —
(i) সমমন্ডল বা হোমোস্ফিয়ার, (Homosphere)
(ii) বিষমমন্ডল বা হেটেরোস্ফিয়ার ।
- (i) সমমন্ডল বা হোমোস্ফিয়ার, (Homosphere)
সমমণ্ডল বা হোমোস্ফিয়ার কাকে বলে ? সমমণ্ডল বা হোমোস্ফিয়ার বলতে কি বোঝো ? (What is Homosphere in Bengali )
- সমমণ্ডল বা হোমোস্ফিয়ার (Homosphere) :- ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিমি উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত অংশে বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন উপাদানের রাসয়নিক গঠন, বিশেষত বিভিন্ন গ্যাসের অনুপাত প্রায় একই রকম থাকে । এই জন্য বায়ুমণ্ডলের এই স্তরকে সমমণ্ডল বা হোমোস্ফিয়ার বলা হয় । হোমোস্ফিয়ার প্রধানত বিভিন্ন গ্যাসের মিশ্রণ, যেমন— নাইট্রোজেন, অক্সিজেন, কার্বন ডাই-অক্সাইড, আর্গন, নিওন, হিলিয়াম, ক্রিপটন, জেনন, হাইড্রোজেন, মিথেন, নাইট্রাস অক্সাইড, ওজন প্রভৃতি গ্যাসের মিশ্রণ দ্বারা গঠিত । এছাড়া জলীয় বাষ্প, ধুলিকণা এবং জৈব ও অজৈব কণিকা যেমন— অতি ক্ষুদ্র খনিজ, লবণ, সমুদ্রতীরের বালুকণা, কয়লার গুঁড়ো বা ধোঁয়া প্রভৃতি দিয়ে গঠিত । এই স্তরটি আবার চার ভাগে বিভক্ত -
- (i) ট্রপোস্ফিয়ার, (Troposphere)
- (ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার, (Stratosphere)
- (iii) মেসোস্ফিয়ার ও (Mesosphere)
- (iv) নিম্ন থার্মোস্ফিয়ার । (Lower Tharmosphere)
- (ii) বিষমমন্ডল বা হেটেরোস্ফিয়ার (Heterosphere)
বিষমমন্ডল বা হেটেরোস্ফিয়ার কাকে বলে ? বিষমমন্ডল বা হেটেরোস্ফিয়ার বলতে কি বোঝো ? (What is Heterosphere in Bengali )
- বিষমমন্ডল বা হেটেরোস্ফিয়ার (Heterosphere) : সমমণ্ডলের ওপরে ৮০ কিমি. থেকে ১০,০০০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরে বায়ুমণ্ডলের গ্যাসীয় উপাদানগুলির অনুপাত সমান থাকে না, এজন্য এই স্তরটিকে বিষমমণ্ডল বা হেটেরোস্ফিয়ার বলে । এই স্তরে গ্যাসীয় পদার্থগুলি তাদের ভর অনুসারে বিভিন্ন উচ্চতায় অবস্থান করে । বিষমমণ্ডল আবার চারটি উপস্তরে বিভক্ত । যথা—
- (i) আণবিক নাইট্রোজেন স্তর,
- (ii) পারমাণবিক অক্সিজেন স্তর,
- (iii) হিলিয়াম স্তর,
- (iv) হাইড্রোজেন স্তর ।
(খ) উষ্ণতার তারতম্যের ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস (Layers of Atmosphere based on variation in temperature) :
বিভিন্ন স্তরে উষ্ণতার তারতম্য অনুসারে বায়ুমণ্ডল আবার ৬টি স্তরে বিভক্ত । যেমন—
- (i) ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল,
- (ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল,
- (iii) মেসোস্ফিয়ার,
- (iv) আয়োনোস্ফিয়ার,
- (v) এক্সোস্ফিয়ার, এবং
- (vi) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার ।
- (i) ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল ( Troposphere )
ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল কাকে বলে ? ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল বলতে কি বোঝো ? ( What is Troposphere in Bengali ) :
- গ্রিক শব্দ ট্রপো (Tropo) কথার অর্থ হল পরিবর্তন (Change) এবং দৈনন্দিন আবহাওয়ায় আমরা যেরকম বিভিন্ন পরিবর্তন অনুভব করি, এই বায়ুস্তরেও সে ধরনের পরিবর্তন দেখা যায় । বায়ুমণ্ডলের একেবারে নীচের স্তরে অবাধে তাপীয় মিশ্রণ ঘটে বলে, একে ট্রপোস্ফিয়ার বলে । বায়ুমণ্ডলের এই সর্বনিম্ন স্তরটি ভূপৃষ্ঠ থেকে নিরক্ষীয় অঞ্চলে ১৮ কিমি. এবং মেরু অঞ্চলে ৮ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত । বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে বায়ুতে প্রায় ৯০% ধূলিকণা, জলীয় বাষ্প, কুয়াশা, মেঘ প্রভৃতি থাকায় এই স্তরে ঝড়, বৃষ্টি, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, তুষারপাত প্রভৃতি ঘটনাগুলি ঘটতে দেখা যায়, এজন্য ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন বায়ুমণ্ডলের এই স্তরকে 'ক্ষুব্ধ মন্ডল' বলে । বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে আমরা বাস করি ।
ট্রপোপজ কাকে বলে ? ট্রপোপজ বলতে কি বোঝো ? ( What is Tropopause in Bengali )
- ট্রপোপজ (Tropopause) : ট্রপোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমাকে বলে ট্রপোপজ । এই স্তরে বায়ুর উষ্ণতা একই রকম থাকে বলে একে সমতাপ অঞ্চল বলে ।
ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল এর বৈশিষ্ট্য (Characteristics of Troposphere in Bangla ) :
- (i) বায়ুমণ্ডলের এই স্তরে ভূপৃষ্ঠ থেকে যতই উপরে ওঠা যায় ততই তাপ মাত্রা কমতে থাকে । প্রতি কিলোমিটারে ৬.৪° বা প্রায় প্রতি ১৬৫ মিটার উচ্চতার জন্য ১° সেন্টিগ্রেড করে তাপ হ্রাস পায়, একে উষ্ণতা হ্রাসের স্বাভাবিক হার বা 'Normal Laps rate' বলে । ভূ-পৃষ্ঠের ওপরে ১০ — ১৩ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুর তাপ এই হারে কমতে থাকে । মধ্য অক্ষাংশে (Middle Latitude) ট্রপোস্ফিয়ারের ঊর্ধ্ব সীমায় বায়ুমণ্ডলের উত্তাপ -৭৫° সেন্টিগ্রেড থেকে -৬০° সেন্টিগ্রেড হয় ।
- (ii) বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তরের মধ্যে ট্রপোস্ফিয়ারই হল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ স্তর । বায়ুমণ্ডলের মোট গ্যাসীয় ভরের প্রায় ৮০% ধারণ করে ট্রপোস্ফিয়ার । এজন্য এখানে বায়ুরচাপ সবচেয়ে বেশি ।
- (iii) ট্রপোস্ফিয়ারের ওপরের স্তরে জলীয়বাষ্প বা মেঘ থাকে না বললেই চলে ।
- (iv) এই অংশে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর চাপ কমতে থাকে । এই স্তরে বায়ুর ঘনত্ব সবচেয়ে বেশি প্রায় শতকরা ৯০ ভাগ ।
- (ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল (Stratosphere)
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল কাকে বলে ? স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল বলতে কি বোঝো ? (What is Stratosphere in Bengali )
- স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল (Stratosphere) : ট্রপোপজের ওপরে নিরক্ষীয় অঞ্চলে ভূপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ৮০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত এবং মেরু অঞ্চলে প্রায় ৫০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুস্তরকে স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বলে । এটি বায়ুমণ্ডলের দ্বিতীয় স্তর । জলীয় বাষ্পহীন এই স্তরে ঝড়-বৃষ্টি হয় না বলে একে শান্তমন্ডলও বলে ।
স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল এর বৈশিষ্ট্য ( Characteristics of Stratosphere in Bengali ):
- (i) স্ট্যাটোস্ফিয়ার স্তরটি নিরক্ষীয় অঞ্চলের তুলনায় মেরু অঞ্চলে অধিক পুরু হয়ে থাকে ।
- (ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারে ২০ - ৩৫ কিমি. উচ্চতার মধ্যে ওজোন গ্যাসের আধিক্য দেখা যায় বলে এই স্তরটিকে ওজোন স্তর বলে ।
- (iii) এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা বৃদ্ধি পায় ।
- (ii) স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে ধূলিকণা, মেঘ প্রভৃতি না থাকায় এখানে ঝড়, বৃষ্টি, বজ্রপাত প্রভৃতি প্রাকৃতিক ঘটনা ঘটে না ।
- (iii) স্ত্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে বায়ুপ্রবাহ, মেঘ, ঝড়, বৃষ্টি ও বজ্রপাত দেখা যায় না বলে দ্রুতগতিসম্পন্ন জেটবিমানগুলো ঝড়-বৃষ্টি এড়িয়ে চলার জন্য স্ট্র্যাটোস্ফিয়ারের মধ্য দিয়ে চলাচল করে । জেটবিমানগুলি সাধারণত এই স্তরের মধ্যে দিয়ে চলার সময়ে আকাশে সাদা দাগ রেখে যায় ।
স্ট্র্যাটোপজ কাকে বলে ? স্ট্র্যাটোপজ বলতে কি বোঝো ? (What is Stratopause in Bengali )
- স্ট্র্যাটোপজ : স্ট্যাটোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমাকে স্ট্র্যাটোপজ বলে । এই স্তরে উষ্ণতার স্থিতাবস্থা বজায় থাকে ।
- (iii) মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere)
মেসোস্ফিয়ার কাকে বলে ? মেসোস্ফিয়ার বলতে কি বোঝো ? ( What is Mesosphere in Bengali )
- মেসোস্ফিয়ার (Mesosphere) : স্ট্র্যাটোপজের ওপর থেকে বায়ুমণ্ডলের যতদূর উচ্চতা পর্যন্ত উষ্ণতা কমতে থাকে, সেই অংশটিকে মেসোস্ফিয়ার বলে । মেসোস্ফিয়ার স্তরটি স্ট্র্যাটোপজের ওপরে স্ট্র্যাটেস্ফিয়ার ও আয়নোস্ফিয়ারের মধ্যে ৮০ কিমি. পর্যন্ত বিস্তৃত । এটি বায়ুমণ্ডলের তৃতীয় স্তর । মেসোস্ফিয়ার স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বায়ুর উষ্ণতা ক্রমশ কমতে থাকে এবং ৮০ কিমি. উচ্চতায় অর্থাৎ এই স্তরের উর্ধ্বসীমায় উষ্ণতা কমে কম বেশি - ৯৩° সে. হয় । মহাকাশ থেকে যেসব উল্কা পৃথিবীর দিকে ছুটে আসে সেগুলি মেসোস্ফিয়ার স্তরের মধ্যে এসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় ।
মেসোপজ কাকে বলে ? মেসোপজ বলতে কি বোঝো ? ( What is Mesopause in Bengali )
- মেসোপজ (Mesopause) : মেসোস্ফিয়ারের ওপরে যে উচ্চতায় তাপমাত্রা হ্রাস পাওয়া থেমে যায়, অর্থাৎ পজ করে, তাকে মেসোপজ বলে । এক কথায় মেসোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমাকে বলে মেসোপজ । এটি এই স্তরে জলীয় বাষ্প জমাট বাঁধে । এর ওপর থেকেই আয়নোস্ফিয়ার স্তরটি শুরু হয় ।
- (iv) আয়োনোস্ফিয়ার বা থার্মোস্ফিয়ার (Ionosphere or Thermosphere)
আয়োনোস্ফিয়ার কাকে বলে ? আয়োনোস্ফিয়ার বলতে কি বোঝো ? ( What is Ionosphere in Bengali )
থার্মোস্ফিয়ার কাকে বলে ? থার্মোস্ফিয়ার বলতে কি বোঝো ? ( What is in hermosphere Bengali )
- আয়োনোস্ফিয়ার (Ionosphere) : মেসোস্ফিয়ার স্তরের শেষ সীমা হল মেসোপজ । আর এই মেসোপজের ওপরে প্রায় ৫০০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত বায়ুমণ্ডলের স্তরকে আয়নোস্ফিয়ার বলে । এই স্তরে গ্যাসীয় কণাগুলি তড়িৎ-আধানযুক্ত বা আয়নিত অবস্থায় থাকে বলে, এই স্তরটিকে আয়নোস্ফিয়ার বলা হয় । এখানে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, ওজোন প্রভৃতি গ্যাস আয়নিত অবস্থায় থাকে । এই স্তরের নীচের অংশে উষ্ণতা অত্যন্ত দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায় বলে স্তরটি থার্মোস্ফিয়ার (Thermosphere) নামেও পরিচিত । মেসোস্ফিয়ারের উর্ধ্বসীমায় অর্থাৎ ভূপৃষ্ঠ থেকে ৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় বায়ুমণ্ডলের তাপমাত্রা কম বেশি – ৯৩° সেলসিয়াস থেকে বাড়তে বাড়তে ৪৮০ কিলোমিটার উচ্চতায় প্রায় ১২৩২° সেলসিয়াসে পরিণত হয় ।
আয়োনোস্ফিয়ার বা থার্মোস্ফিয়ার বৈশিষ্ট্য ( Characteristics of Ionosphere or Thermosphere in Bengali ):
- (i) এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা অত্যন্ত দ্রুতহারে বৃদ্ধি পায় ।
- (ii) অতি বেগুনি রশ্মি ও মহাজাগতিক রশ্মির সংঘাতে আয়নোস্ফিয়ারে প্রভূত পরিমাণে ধনাত্মক ও ঋণাত্মক আয়নের সৃষ্টি হয় ।
- (iii) এই স্তরে তড়িদাহত অণুর চৌম্বক বিক্ষেপণের ফলে সুমেরু ও কুমেরু অঞ্চলে এক রকম উজ্জ্বল আলোক বিচ্ছুরণ দেখা যায়, একে মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা বলে । এই মেরুজ্যোতি বা মেরুপ্রভা সুমেরুতে সুমেরুপ্রভা এবং কুমেরুতে কুমেরুপ্রভা নামে পরিচিত ।
- (iv) প্রখর সূর্য কিরণের জন্য হালকা বায়ু দিয়ে গঠিত এই স্তরের ভর বায়ুমণ্ডলের মোট ভরের মাত্র ০.৫% ।
- (v) ভূপৃষ্ঠের বেতার তরঙ্গগুলি আয়নোস্ফিয়ার স্তর ভেদ করে আরও ওপরে যেতে পারে না বলে এই স্তর থেকে বেতার তরঙ্গ প্রতিফলিত হয়ে পুনরায় পৃথিবীতে ফিরে আসে । তাই বিভিন্ন রেডিও স্টেশন থেকে প্রচারিত গান, বাজনা, নাটক, কবিতা, সংবাদ প্রভৃতি আমরা রেডিও মারফত বাড়ি বসে শুনতে পাই ।
- (v) এক্সোস্ফিয়ার (Exosphere)
এক্সোস্ফিয়ার কাকে বলে ? এক্সোস্ফিয়ার বলতে কি বোঝো ? ( What is Exosphere in Bengali )
- এক্সোস্ফিয়ার (Exosphere) : এক্সোস্ফিয়ার হল বায়ুমণ্ডলের সবচেয়ে দূরবর্তী স্তর । এই স্তরটি আয়নোস্ফিয়ারের ওপরে প্রায় ৭০০ কিমি. উচ্চতা পর্যন্ত বিস্তৃত ।
এক্সোস্ফিয়ার এর বৈশিষ্ট্য ( Characteristics of Exosphere in Bengali ):
- (i) এই স্তরে উচ্চতা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণতা বৃদ্ধি পায় ।
- (ii) এই স্তরটি প্রধানত হাইড্রোজেন, হিলিয়াম এবং কিছু ভারী অণু যেমন নাইট্রোজেন, অক্সিজেন ও কার্বন ডাইঅক্সাইড দ্বারা গঠিত ।
- (iii) এই স্তরের বায়ু এত হালকা যে এর অস্তিত্ব প্রায় বোঝাই যায় না ।
- (iv) এক্সোস্ফিয়ার স্তর থেকে বায়বীয় কণাগুলি ক্রমাগত মহাশূন্যে নির্গত হয় ।
- (v) এই স্তরের উষ্ণতা প্রায় ১২০০° সে. থেকে ১৬০০° সে. ।
- (vi) ম্যাগনেটোস্ফিয়ার ( Magnetosphere )
ম্যাগনেটোস্ফিয়ার কাকে বলে ? ম্যাগনেটোস্ফিয়ার বলতে কি বোঝো ? ( What is Magnetosphere in Bengali )
- ম্যাগনেটোস্ফিয়ার (Magnetosphere) : এক্সোস্ফিয়ার স্তরের ওপরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বেষ্টনকারী চৌম্বকক্ষেত্রটি হল ম্যাগনেটোস্ফিয়ার স্তর । এটি বায়ুমণ্ডলের সর্বশেষ স্তর । এক্সোস্ফিয়ার স্তরের ওপর ১,৫০০ কিমি. থেকে ১০,০০০ কিমি বা তারও বেশি পর্যন্ত ম্যাগনেটোস্ফিয়ার স্তর বিস্তৃত । এই স্তরটি ইলেকট্রন ও প্রোটন দ্বারা গঠিত । এই স্তরের জন্য পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের আয়নিত কণার উপস্থিতি নিয়ন্ত্রিত হয় । সৌর বাত্যা (solar wind) থেকে নির্গত ইলেকট্রন ও প্রোটনের প্রভাবে এই স্তরে একটি স্থায়ী চুম্বকীয় ক্ষেত্রের সৃষ্টি হয়েছে । তাই এই স্তরের নাম হয়েছে ম্যাগনেটোস্ফিয়ার । এটি হল পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের শেষ সীমা । স্তরটি ধীরে ধীরে বায়ুশূন্য হয়ে মহাশূন্যে বিলীন হয়ে যায় ।
এখানে আরও আলোচনা করা হয়েছে নিচের বিষয়াবলী সম্পর্কে যেমন -
- বায়ুমণ্ডলের স্তর কয়টি ও কী কী
- বায়ুমণ্ডল কাকে বলে
- বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে চাপ বেশি
- বায়ুমণ্ডলের শীতলতম স্তর কোনটি
- বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতম স্তর কোনটি
- বায়ুমণ্ডলের বৈশিষ্ট্য
- উষ্ণতার তারতম্য ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো
- বায়ুমণ্ডলের স্তর কয়টি ও কী কী
- বায়ুমণ্ডল কাকে বলে
- বায়ুমণ্ডলের উষ্ণতম স্তর কোনটি
- বায়ুমণ্ডলের কোন স্তরে চাপ বেশি
- বায়ুমণ্ডলের বৈশিষ্ট্য
- উষ্ণতার তারতম্য ভিত্তিতে বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস করো
- বায়ুমণ্ডলের স্তর গুলির মধ্যে কোনটি তে চাপ সবচেয়ে বেশি এবং কেন
এই বিষয় সম্পর্কে আপনি যদি লিখতে চান তবে আপনার লিখা আমাদের ইমেলে পাঠান আমরা আপনার লিখা প্রকাশিত করবো।
- বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস | মাধ্যমিক ভুগোল | ২ অধ্যায় বায়ুমণ্ডল
- বায়ুমণ্ডল কাকে বলে ? বায়ুমণ্ডলের কয়টি স্তর? | Atmosphere and It's Layer
- বায়ুমণ্ডল কাকে বলে? বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস? বায়ুমণ্ডলের প্রয়োজনীয়তা
- বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস ও তাদের বর্ণনা
- বায়ুমণ্ডলের বিভিন্ন স্তর PDF | Layers of the Atmosphere
- বায়ু মণ্ডলের স্তর বিন্যাস || Layers of the atmosphere
- বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাসের সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও
- বায়ুমণ্ডলের উপাদান কী কী এবং কোন উপাদানের পরিমাণ কত?
Layers of Atmosphere: The layers of the Earth's atmosphere are divided into two parts based on material variation and temperature variation.
For example—
(a) Stratification of atmosphere based on material variation,
(b) Stratification of atmosphere based on temperature variation.
(A) Layers of Atmosphere based on Chemical Composition:
The atmosphere is mainly divided into two layers according to the variation of the elements and chemical composition of the atmosphere. Namely —
(i) Homosphere or Homosphere,
(ii) Heterosphere or Heterosphere.
(B) Layers of Atmosphere based on variation in temperature:
The atmosphere is again divided into 6 layers according to the variation in temperature at different levels. Such as—
(i) Troposphere,
(ii) Stratosphere,
(iii) Mesosphere,
(iv) Ionosphere,
(v) Exosphere, and
(vi) Magnetosphere.
বায়ুমণ্ডলের স্তরবিন্যাস (Layers of Atmosphere), মাধ্যমিক ভূগোল দ্বিতীয় অধ্যায়, ট্রপোস্ফিয়ার বা ক্ষুব্ধমন্ডল, স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার বা শান্তমন্ডল, মেসোস্ফিয়ার, আয়োনোস্ফিয়ার, এক্সোস্ফিয়ার, এবং ম্যাগনেটোস্ফিয়ার