দার্শনিকদের সংক্ষিপ্ত পরিচয় গৌতম বুদ্ধ, একাদশ শ্রেণী দর্শন - প্রথম সেমিস্টার | Class 11, 1st Semester Philosophy (Introduction of Gautama Buddha Philosopher)
১০. গৌতম বুদ্ধ (Gautama Buddha)
আমরা এই পোস্টের মধ্যে একজন গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিকের উপরে বিস্তৃত আলোচনা করবো । আশাকরি তোমাদের একাদশ শ্রেণীর, প্রথম সেমিস্টারের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন গুলির উত্তর এখান থেকেই তোমারা কমন পেয়ে যাবে। নিচে গৌতম বুদ্ধ দার্শনিকের বিষয়ে আলোচনা করা হল ।
গৌতম বুদ্ধ (Gautama Buddha)
গৌতম বুদ্ধ আনুমানিক ৫৬৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দে হিমালয়ের পাদদেশে কপিলাবস্তুর এক রাজপরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। মানুষের নানান দুঃখ-দুর্দশা দেখে তাঁর মনে বৈরাগ্য আসে। এই দুঃখ থেকে মুক্তি পাওয়ার উপায়ের সন্ধানে, সকল আবাস ও বিলাস তুচ্ছ করে মাত্র ২৯ বছর বয়সে সংসার ত্যাগ করে তিনি সন্ন্যাসী হন এবং ৩৫ বছর বয়সে বোধি বা প্রজ্ঞা লাভ করেন। তখন তাঁর নাম হয় বুদ্ধ বা জ্ঞানী। বোধি অর্থে ‘সত্যের জ্ঞান’। দুঃখ মুক্তির পথই সত্য। বোধির আলোকে চারটি সত্য তাঁর কাছে প্রকাশিত হয়। দুঃখ, সমুদয়, নিরোধ ও মার্গ—এই চারটি সত্যকে ‘আর্যসত্য’বলা হয়। আর্যসত্যের জ্ঞান ও তদানুসারী আচরণের মধ্য দিয়ে, মানুষ সকল দুঃখ থেকে মুক্তি পেতে পারে বলে বুদ্ধদেব মনে করতেন। তিনি বোধিলাভের পর কোথাও নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করেননি, বরং লোকসমাজে ফিরে এসে বহু মঠ ও সংঘ প্রতিষ্ঠা করেন। এরপর দীর্ঘ ৪৫ বছর বুদ্ধদেব ভারতের বিভিন্ন স্থানে তাঁর বৌদ্ধ ধর্মের বাণী প্রচার করেন। তাঁর প্রচারিত বাণী ভারত ছাড়াও অন্যান্য দেশে (ব্রহ্মদেশ, জাভা, মালয়, সুমাত্রা, পনেপাল তিব্বত, মঙ্গলিয়া, কোরিয়া, চীন ও জাপানে) বিস্তৃতি লাভ করে। তিনি আজীবন বোধিলব্ধ আর্যসত্য প্রচার করেছিলেন এবং সর্বজীবের কল্যাণ কামনায় নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন।
অবশেষে ৪৬৩ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কুশীনগর নামক স্থানে ৮০ বছর বয়সে পরিনির্বাণ (মৃত্যু) লাভ করেন।
বুদ্ধদেব কোনো গ্রন্থ রচনা করেননি তিনি মুখে মুখেই তাঁর শিষ্যদের উপদেশ দিতেন। বুদ্ধদেবের পরিনির্বাণের পর তাঁর শ্রোতা ও শিষ্যরা তাঁর উপদেশাবলীকে লিপিবদ্ধ করেন। বুদ্ধদেবের বাণীর সংকলনকে ত্রিপিটক বলা হয়। ত্রিপিটক বৌদ্ধদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ।