Type Here to Get Search Results !

লালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ অধ্যায়ের সকল প্রশ্ন ও উত্তর । একাদশ শ্রেণী বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার, চতুর্থ অধ্যায় । Class 11, 2nd semester Bengali, Fourth Chapter

WB..Note 0

একাদশ শ্রেণী বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার, চতুর্থ অধ্যায় লালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ প্রশ্ন উত্তর | Class 11, 1st semester Bengali, Fourth Chapter । WBCHSE । Lalon sha fokirer gan

শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করবো একাদশ শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের চতুর্থ অধ্যায় লালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ নিয়ে। আশাকরি তোমরা একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টারের এই লালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ অধ্যায়টি থেকে যেসব প্রশ্ন দেওয়া আছে তা কমন পেয়ে যাবে। আমরা এখানে একাদশ শ্রেণীর, দ্বিতীয় সেমিস্টারের বাংলা বিষয়ের চতুর্থ অধ্যায় লালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ এর SAQ, শূন্যস্থান পূরণ, এক কথায় উত্তর দাও, Descriptive, ব্যাখ্যা মুলক প্রশ্নোত্তর , সংক্ষিপ্ত নোট এগুলি দিয়েছি। এর পরেও তোমাদের এই লালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ অধ্যায়টি থেকে কোন অসুবিধা থাকলে, তোমরা আমাদের টেলিগ্রাম, হোয়াটসাপ , ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারো । 

লালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ অধ্যায়ের সকল প্রশ্ন ও উত্তর । একাদশ শ্রেণী বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার, চতুর্থ অধ্যায় । Class 11, 2nd semester Bengali, Fourth Chapterলালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ অধ্যায়ের সকল প্রশ্ন ও উত্তর
অনধিক ১৫০ শব্দে উত্তর:- দাও । 
প্রতিটি প্রশ্নের মান ৫

প্রশ্ন ১ 

"এই মানুষে মানুষ গাথা
দেখখা যেমন আলেক লতা"- 
পঙক্তিদুটিতে রচনাকার কাকে, কেন দেখবার নির্দেশ দিয়েছেন? গাথা মানুষের সঙ্গে আলেক লতার সম্পর্কের বিন্যাসটি আলোচনা করো। ২+৩=৫

উত্তর:-
পঙক্তি দুটিতে 'লালন শাহ্ ফকিরের গান' রচনায় সাধক-শিষ্যকে গুরু নির্দেশ দিয়েছেন। মানুষ-গুরু বা সাধক- গুরু মনে করেন, সাধক-শিষ্যকে বাউল সাধনায় সিদ্ধিলাভ করতে হলে আগে নিজেকে ভালোভাবে জানতে হবে। নিজের শরীরের মধ্যে লীন থাকেন মনের মানুষ। নিজেকে অবহেলা করে পরমকে ভজনা করলে, তাঁকে পাওয়া যাবে না। কারণ স্বর্ণলতার জন্ম-ইতিহাস যেমন জানা যায় না, তেমনই মনের মানুষ যে সাধকের শরীরে মিশে থাকেন সহজে তা জানা যাবে না।

■ সম্পর্ক পরিপূরকতার : 
বাউলদের অন্বিষ্ট 'মনের মানুষ'-এর সন্ধান। তিনি থাকেন সাধকের শরীরে। ভগবানের অংশস্বরূপ। সাধক সাধনায় সফল হলে, তবেই তাঁর স্বরূপ উপলব্ধি করতে পারবেন আপন শরীরে। সাধ্যসত্তা আর সাধকসত্তা তখন অভিন্ন।

■ পরমের সন্ধান : 
বস্তুত, প্রকৃতি-পুরুষ এক সত্তা হয়ে দ্বি-দল পদ্মে বিরাজমান পরম-গুরুর সন্ধান পায়। 'মনের মানুষ' এই দ্বি-দল পদ্মে অবস্থান করেন। সাধককে উজান বা ঊর্ধ্বে নিতে হবে। সেই উত্তর:-ণের মাধ্যম হল অলক্ষ বায়ু বা দম।

■ কুম্ভক শক্তির ভূমিকা: 
ষোড়শ দল বা বিশুদ্ধচক্র এবং দশম দল বা মণিপুর চক্র সাধন পরম্পরায় 'মূলাধার'-এ স্থিত হন। একমাত্র কুম্ভক শক্তিই তখন পারেন সাধকের স্বরূপকে উপলব্ধি করাতে। জীবসত্তার শরীরে পরমসত্তা 'গাথা' আছেন। একমাত্র 'আলেক লতা' সেই উপলব্ধিতে সাধককে পৌঁছে দিতে পারে। তাই পরমসত্তা আর সাধক একে অপরের পরিপূরক।


প্রশ্ন ২ 

"জেনে শুনে মুড়াও মাথা 
জাতে তরবি।।"_
উদ্ধৃত অংশটিতে 'তরবি' কথার অর্থ কী? জাতে তরবির সঙ্গে মাথা মুড়ানোর সম্পর্কটি আলোচনা করো। ২+৩=৫


উত্তর:- 
■ জাতে ওঠা: 
উদ্ধৃত অংশটিতে 'তরবি' কথার অর্থ উত্তীর্ণ হবি। গুরু লালন শাহ ফকির শিষ্যদের পরামর্শ দিয়েছেন, কী-ভাবে সাধনায় সিদ্ধিলাভ করে জাতে ওঠা যায়। তিনি বলেন, সাধক যেন সাধনার পথ-সম্পর্কে খুঁটিনাটি জেনে অনুরক্ত হন। কেননা, দেহের ভিতরেই সাঁইয়ের অধিষ্ঠান। সাধনায় সিদ্ধি লাভ করতে গেলে, সাধক কোন্ পথে এগোবেন আগে তা গুরুর সান্নিধ্য-সাহচর্যে যেন ঠিকমতো জেনে নেয়।

■ গুরু নির্দেশনা: 
'জেনে শুনে' মাথা মুড়িয়ে অর্থাৎ গুরুর নির্দেশ যদি ঠিকমতো পালন করা সম্ভব হয়, তবেই সাধকের এ পথে আসা উচিত।

■ গভীর ও নির্জন পথ: 
'জাতে তরবি'-র সঙ্গে শিষ্যের - মাথা মুড়োনোর সম্পর্কটি বোঝাপড়ার। কেননা-বাউলদের = সাধনার পথে বহু বাধা। গুরুই শিষ্যকে যথাযথ চালিত করতে পারেন। নিষ্ঠা গুরু-নির্দেশিত পথ অনুসরণ করলে সাধক-শিষ্য মনের মানুষের সন্ধান পাবে।

■ আত্মজ্ঞান ও সনিষ্ঠ অনুসরণ: 
মনের মানুষ থাকেন সাধকের শরীরে। মানুষ-গুরুই মুরশিদের সন্ধান জানেন। তিনিই পারেন শিষ্যকে সে সন্ধান দিতে। কেননা, তিনিই পরমের প্রতিনিধি। সাধক-শিষ্য যদি মানুষ-গুরুকে সনিষ্ঠ অনুসরণ করতে পারেন, তবে তিনিও একসময় মনের মানুষের সন্ধান পাবে। অর্থাৎ প্রকৃত বাউল সাধনায় উত্তীর্ণ হবেন। এটিই জাতে ওঠা।


প্রশ্ন ৩ 

'লালন শাহ্ ফকিরের গান'-এ বাউল ধর্ম-সাধনার যে পারিভাষিক শব্দগুলি ব্যবহৃত হয়েছে সেগুলি সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।


উত্তর:- 
বাউল সাধকরা অনেক সময় তাঁদের রচিত গান- গুলির মধ্যে এক-বা একাধিক পারিভাষিক শব্দ প্রয়োগ করতেন। উদ্দেশ্য অ-দীক্ষিতদের কাছ থেকে আড়াল করা। সেই শব্দগুলি বেশিরভাগই হত বাউলদের সাধনতত্ত্বনির্ভর। 'লালন শাহ ফকিরের গান' রচনাটিতেও এরকম তত্ত্বনির্ভর কতকগুলি পারিভাষিক শব্দ গীতিকার ব্যবহার করেছেন। সেগুলির প্রেক্ষিতগত গুরুত্ব আছে। শব্দগুলি এই রকম-

■ সোনার মানুষ : 
সোনার মানুষই বাউলদের মনের মানুষ। যাঁর সন্ধান পাওয়ার জন্যে গুরু-নির্দেশিত পথে সাধক আজীবন মগ্ন থাকেন।

■ ক্ষ্যাপা: 
ভাবের ঘোরে মগ্ন সাধক-বাউলকে 'ক্ষ্যাপা' নামে অভিহিত করা হয়। এঁদের আচরণ অনেক সময় সামাজিক মানুষের আচরণ-বিধির সঙ্গে মেলে না।

■ দ্বি-দল মৃণাল : 
আজ্ঞাচক্র; এই বিশেষ চক্রে পরম পুরুষ মুরশিদ অবস্থান করেন। পুরুষ-প্রকৃতির মিলিত বিশেষ অনুভূতি-স্তর।

■ মানুষ : 
গুরু-বাউলদের কাছে দু-রকমের গুরু আছেন। মানুষ-গুরু এবং পরম-গুরু। এই মানুষ-গুরু পরম-গুরুর প্রতিনিধি। সাধককে তিনি যথাযথভাবে পরিচালিত করে পরম-গুরুর সন্ধান দেন।

■ আলেক লতা: 
স্বর্ণলতা বা আদি-অন্ত্যহীন অবস্থা। পরম-গুরুর প্রতীক এটি।

■ শূন্যকার: 
বাউল সাধনায় 'শূন্যকার' বলতে বোঝায় হ্যাঁ-ও না, আবার না-ও না। অর্থাৎ মনের এক বিচলিত • অবস্থাকে 'শূন্যকার' শব্দে প্রকাশ করেন সাধক বাউলরা।


প্রশ্ন  ৪ 

"মানুষ ছাড়া মন আমার পড়বি রে তুই শূন্যকার"-
কথাগুলি কার উদ্দেশে বলা হয়েছে এবং 'শূন্যকার' কী? মনের 'শূন্যকার'-এ পড়া বলতে কী বোঝানো হয়েছে? ২+৩=৫


উত্তর:- 
'লালন শাহ ফকিরের গান'-এর এই অংশটি সাধক লালনের আত্মজিজ্ঞাসায় ঋদ্ধ। নিজের তথা যে-কোনো বাউল, যাঁরা সাধন-প্রত্যাশী, তাঁদের উদ্দেশে কথাটি বলা হয়েছে।

■ 'শূন্যকার': 
শূন্যকার হল বৌদ্ধদর্শনের একটি পারিভাষিক শব্দ।

■ হ্যাঁ-না-এর দোলাচলতা 'শূন্যকার' বলতে বোঝায় হ্যাঁ-ও নয়, আবার না-ও নয়। বাউল যদি সাধক হিসেবে নিজের দেহকে অবহেলা করেন, তবে এই সাধনায় পরমের সন্ধান তিনি পাবেন না। দেহকে মর্যাদা দিয়ে গুরু নির্দেশিত পথে চললে সাধনায় উত্তীর্ণ হবেন।

■ "শূন্যকারে পড়া": 
'শূন্যকার' শব্দটি বিশেষ ব্যঞ্জনার্থে ব্যবহার করা হয়েছে। মনের দোলাচলতা তথা এক বিচলিত অবস্থা শূন্যকার। এই দোলাচলতায় পড়ে সাধক যদি আপন মানবদেহকে অবহেলা করেন, তাহলে পরমের সন্ধান তিনি পাবেন না। কারণ স্বয়ং ভগবান গুরুরূপে মানবদেহে প্রতিনিধি হিসেবে অবস্থান করেন।

■ আত্মসাধনাতেই মনের মানুষের সন্ধান: 
বাউলদের সাধনা গুরুবাদী ও দেহকেন্দ্রিক সাধনা। তাই গুরুই পাবেন সাধককে সুষ্ঠু পথে পরিচালিত করে পরম-গুরুর সন্ধান দিতে। । সেই পরম-গুরু থাকেন সাধক-শিষ্যের নিজস্ব শরীরে। সাধকের তাই প্রাথমিক দরকার দেহসাধনা তথা আত্মসাধনা। দেহকে অবহেলা করার অর্থ দেহলীন পরমকে অবমাননা। একই সঙ্গে মানুষ-গুরুকে অবমাননা করা। এমন অবস্থায় সাধক বা 'শূন্যকার'-এ পড়বে। তখন 'মনের মানুষ'কে আর পাওয়া যাবে না।

প্রশ্ন ৫ 

বাউল সাধনার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি সংক্ষেপে আলোচনা করো।


উত্তর:- 
বাউল সম্প্রদায় মনের মানুষের খোঁজে ব্যাকুল। 'ভাঙে- ব্রহ্মাণ্ড' ভাবনায় বিশ্বাসী তাঁরা। তাঁদের সাধনার প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি এই রকম-

■ আত্মা-পরমাত্মা :
বাউলদের ধারণা, দেহাধার-স্থিত আত্মা পরমাত্মারই অংশ। আত্মাকে জানতে গেলে পরমাত্মাকে যথাযথভাবে জানা দরকার। লালনের কথায়-
"আত্মা আর পরমাত্মা ভিন্নভেদ জেনো না।"

■ গুরুবাদী সাধনা: 
বাউলরা গুরুবাদে বিশ্বাসী। গুরুকে পরমের অবতার ভাবেন- "আপন ভজন কথা না কহিবে যথা-তথা"

■ ক্ষ্যাপার মতো আচরণ :
সাধারণ যুক্তিক্রমের মধ্যে বাউলদের ধরা যায় না। তাঁরা- "ও তার বিপরীত রীতি-পদ্ধতি, কে জানে কখন সে থাকে কেমন।"

■ প্রেম সাধনা: 
বাউলদের সাধনায় বড়ো হয়ে উঠেছে প্রেমের সাধনা। তাঁরা বলেন,-
"জেন্ত মরা প্রেম-সাধন কি পারবি তোরা"

■ পারিপার্শ্বের মধ্যে গভীরের তাৎপর্য সন্ধান: 
চারপাশের নিত্যব্যবহার্য জিনিসের মধ্যে বাউলরা অনায়াসে খুঁজে পান সাধনতত্ত্বের উপকরণ।

"এ আমার এই কাদামাখা সার হল
ধর্মমাছ ধরব বলে নামলাম জলে
ভক্তিজাল ছিঁড়ি গেল।”

■ সাম্প্রদায়িক মিলনের স্মারক: 
বাউলদের মধ্যেই ধর্মীয় প্রসন্নতা আর উদারতার মূর্ত প্রকাশ ঘটেছে। তাই পাঞ্জু শাহ্ বলেন-
"শুধু কি আল্লা বলে ডাকলে তারে পাবি ওরে মন-পাগেলা। যে ভাবে আল্লাতালা বিষমলীলা ত্রিজগতে করছে খেলা।" বাউলদের এই বৈশিষ্ট্যগুলি তাঁদের সাধনার প্রধান অবলম্বন - হয়ে উঠেছে।


প্রশ্ন ৬ 

"মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি"- 'মানুষ ভজলে' কথাটির অর্থ এবং 'সোনার মানুষ' হওয়ার অর্থ কী? মানুষ ভজা ও সোনার মানুষ হওয়ার মধ্যে বাউলদের কোন্ অভিপ্রায় কাজ করে ? ২+৩=৫


উত্তর:- 
মানুষের ভজনা:-  
'লালন শাহ ফকিরের গান' রচনার 'মানুষ ভজলে' কথাটির অর্থ হল মানুষকে ভজনা করা। বাউলদের সাধনা দেহবাদী সাধনা। দেহতে বিরাজ করেন সাঁই বা ভগবান। সেই ভগবানের করুণা পেতে গেলে মানুষকে তথা নিজেকে সাধনা করতে হবে।

■ সোনার মানুষ: 
'সোনার মানুষ' হওয়ার অর্থ মনের মানুষ হওয়া। বাউলদের সাধনার উদ্দেশ্য হল পরমের সন্ধান পাওয়া। তা পেতে গেলে দেহের ভিতর গোপন-থাকা মনের মানুষের সন্ধান পেতে হবে।

■ বাউলদের অভিপ্রায়:- 
আত্মা বা স্রষ্টায় বিশ্বাস করে না। বাউল-ফকিরেরা দেহবিহীন তারা ভাবে, সূক্ষ্ম আলোক- কণার মতো 'নুর' থেকে প্রথমে সৃষ্টি হয়েছে মাটি। সেই মাটি থেকে ক্রমশ মানুষসহ অন্যান্য জীব জন্ম নিয়েছে। অলৌকিক কোনো স্রষ্টা নেই। বস্তুর মৌলিক উপাদানগুলির আকস্মিক সম্মিলনে এই জগৎ ও জীবনের উদ্ভব হয়েছে।

■ আত্মসাধনা: 
সাধারণ এই মানবদেহের মধ্যেই পরম সাঁইয়ের অবস্থান। সোনার মানুষই মনের মানুষ। এই সোনার মানুষের সন্ধান পেতে হলে দেহধারী মানুষকে আত্মসাধনা করতে হবে। এই মানুষ ভজা ও সোনার মানুষ হওয়ার মধ্যে দিয়েই সাধকের পরমপ্রাপ্তি ঘটে।


প্রশ্ন ৭ 

"মানুষ-গুরু কৃপা হলে জানতে পাবি।।"- 'মানুষ' বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে এবং মানুষ- গুরুর কৃপা হলে কাকে জানা যাবে? সে মানুষকে জানতে গুরুর কৃপার প্রয়োজন কেন বুঝিয়ে দাও। ৩+২=৫


উত্তর:- 
■ মানুষ-গুরু: 
'লালন শাহ ফকিরের গান' রচনায় 'মানুষ' বলতে 'মানুষ-গুরু'-কে বোঝানো হয়েছে। এই মানুষ-গুরু সাধক-শিষ্যদের ভগবানের দিকে পরিচালনা করেন। পাশাপাশি পরামর্শ দেন লৌকিক ও ব্যাবহারিক বিষয়েও। পুরুষ-প্রকৃতি- বিষয়ক যোগ-সাধনার সময়ও তিনি উপস্থিত থাকেন।

■ পরমের পরামর্শ: 
গুরুকূপা হলে পরম তথা ভগবানকে জানা যাবে। যাঁকে জানা যাবে তিনিই গুরু। তিনিই মুরশিদ। জগতের আরাধনার পরম সম্পদ তিনি। ভগবান যে স্বয়ং গুরুরূপে শিষ্যকে সাধনপথে পরিচালিত করছেন। লৌকিক ও ব্যাবহারিক নানা বিষয়ে প্রয়োজনমতো পরামর্শ দেন তিনি। কখন কোন্ মুদ্রা সাধনার কোন্ স্তরে অভ্যাস ও অনুশীলন করতে হবে, তাও তিনি জানান।

■ দিকনির্দেশ:  
প্রকৃতি-পুরুষ ঘটিত যোগ-সাধনার সময়ও ওই মানুষ-গুরু উপস্থিত থেকে সাধনার দিকনির্দেশ করেন।

■ গুরুর রূপভেদ: 
বস্তুত, সাধক-বাউলরা তাঁদের গুরুকে সর্বোচ্চ স্থান দেন। গুরুকে তাঁরা দুটি রূপে দেখেন; মানুষ- গুরুরূপে আর পরমতত্ত্ব বা ভগবানরূপে। মানুষ-গুরু সেই পরম- গুরুর প্রতিনিধি। এই মানুষ-গুরুর প্রতি ভক্তি-নিষ্ঠা না হলে পরমের অনুগ্রহ লাভ হয় না। তাই পরম বা মুরশিদের কৃপা পেতে গেলে ওই মানুষ-গুরুর অনুগ্রহ লাভ করতেই হবে।

প্রশ্ন ৮ 

"মানুষ-গুরু কৃপা হলে জানতে পাবি।।"-
'মানুষ-গুরু' বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? যাকে জানা যাবে, তার স্বরূপ আলোচনা করো। ২+৩=৫


উত্তর:- 
■ দেহধারী গুরু: 
'লালন শাহ ফকিরের গান' অংশে। 'মানুষ-গুরু' বলতে মানবদেহধারী যে গুরু শিষ্য-সাধককে সাধনার পথ দেখান, তাঁকে বোঝানো হয়েছে। বাংলার বাউল- সাধকেরা তাঁদের সাধনায় গুরুকে সর্বোচ্চ স্থান দেন, এই মানুষ-গুরু সাধকের সামনে রক্তমাংসের দেহ নিয়ে অবস্থান করেন। তাঁর প্রতি আন্তরিক নিষ্ঠা না থাকলে মনের মানুষের সন্ধান পাওয়া যাবে না।

■ মানব-গুরু ও মুরশিদ অভিন্ন: 
এই মানুষ-গুরুই পরম- গুরু বা মুরশিদ। জগতের পরম সম্পদ তিনি। কেন-না, তাঁর মধ্যে জায়মান পরম সত্তা ভগবান। সেদিক থেকে তিনি ভগবানের অংশ-বিশেষ। গুরুর রক্তমাংসের মানব শরীরে ভগবান স্বয়ং উপস্থিত থেকে শিষ্যকে পরিচালিত করছেন।

■ পরামর্শদাতা: 
লৌকিক ও ব্যাবহারিক বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ দেন মানুষ-গুরু। কখন, কোন্ অবস্থায় সাধনার কোন্ মুদ্রা অনুশীলন করতে হবে, সাধক তা জানতে পারেন গুরুর নির্দেশিত পথে। এমনকি, প্রকৃতি-পুরুষ গঠিত যোগ-সাধনার সময়ও এই মানুষ-গুরু উপস্থিত থেকে সাধনার দিগনির্দেশ করেন।

■ আজ্ঞাচক্রের উপস্থিতি: 
মানুষ-গুরুর মধ্যেই বিরাজমান আজ্ঞাচক্র। তিনিই সাধনায় উত্তীর্ণ হয়ে ভগবানের ঐশী মহিমাকে ধারণ করে আছেন। তাই শিষ্যদের মধ্যে কোনো মনান্তর বা মতান্তর হলে, সেই মত-বিরোধের মীমাংসা তিনিই করেন। যাতে সংকীর্ণ বিভেদ ভুলে সাধক তাঁকে যথাযথভাবে অনুসরণ করতে পারেন এবং সাধনায় সফল হতে পারেন।

প্রশ্ন ৯ 

"মানুষ ছেড়ে ক্ষ্যাপারে তুই মূল হারাবি।।”- 'মানুষ ছেড়ে' শব্দবন্ধটির অর্থ কী এবং 'ক্ষ্যাপা' বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? মূল হারানোর বিষয়টি বুঝিয়ে দাও। ৩+২=৫


উত্তর:- 
'মানুষ ছেড়ে' শব্দবন্ধের অর্থ : 'লালন শাহ্ ফকিরের গান' কবিতায় বলা হয়েছে, বাউলদের সাধনা দেহকেন্দ্রিক সাধনা। সেই পঞ্চভূতের সমন্বয়ে গঠিত রক্তমাংসের শরীরে বিরাজ করেন সাঁইগুরু। সুতরাং আপন দেহকে বাদ দিয়ে সাধনা করলে ভগবানের সন্ধান পাওয়া যাবে না। কেন-না, মানবদেহেই বিশেষরূপে বিরাজ করেন ভগবান। তাঁর কাছে যেতে গেলে দেহকে মূল্য দিতে হবে।

■ সাধক বাউল: 
'ক্ষ্যাপা' বলতে সাধক-বাউলকে বোঝানো হয়েছে। কারণ, এই বাউলরা বিশেষ ভাবের ঘোরে থাকেন। সেই ভাবে এমন মোহিত থাকেন যে সামাজিক আচার-বিচার সম্বন্ধে তাঁদের কোনো খেয়াল থাকে না। ভাবের ঘোরে এঁরা পাগল থাকেন।

■ মূল হারানো: 
'মূল' কথাটির অর্থ হল সাধনার লক্ষ্য। বাউলদের সাধনা পরমকে পাওয়ার সাধনা। সেই পরম সাধকের দেহের মধ্যেই অবস্থান করেন। গুরুর দেখানো পথে : পাওয়া যায় সেই পরমের সন্ধান। যেহেতু দেহের মধ্যে পরমের অধিষ্ঠান, তাই দেহধারী মানুষকে কোনোভাবেই অবহেলা করা যাবে না। অবহেলা করলে মূল তথা সাধনার লক্ষ্য হারিয়ে যাবে।


প্রশ্ন ১০ 

 "এই মানুষে মানুষ গাথা"- 'এই মানুষ' বলতে কাকে বোঝানো হয়েছে? সেখানে মানুষ কীভাবে গাথা আছে আলোচনা করো। ২+৩=৫


উত্তর:- 
■ বাস্তবের বাউল:-
'লালন শাহ্ ফকিরের গান' রচনায় 'এই মানুষ' বলতে প্রথমত, রক্তমাংসের দেহধারী সাধারণ বাউলদের বোঝানো হয়েছে। আবার যেহেতু পঞ্চভূতে গঠিত মানবদেহেই সাধক-গুরু তথা 'মানুষ-গুরু' অবস্থান করেন, সে-কারণে একই সঙ্গে সাধক-গুরুকেও বোঝানো হয়েছে।

■ পরম জীবসত্তায় নিহিত: 
বাউল সাধক প্রথমত রক্ত- মাংস তথা পঞ্চভূতের সমন্বয়ে গঠিত জীবসত্তা। সেই সত্তার শরীরে গাথা আছেন মনের মানুষ। সাধারণ বাউল সাধনায় সিদ্ধিলাভ করলে ভগবানের সন্ধান পান। তখন তিনি হয়ে ওঠেন গুরু। আবার এই গুরু তখন আর শুধু গুরু থাকেন না। তিনি হয়ে ওঠেন ভগবানের বিশেষ প্রকাশ রূপ। কেন-না, মানবশরীরের মধ্যেই ভগবানের অস্তিত্ব নিহিত আছে।

■ গুরুর দুইরূপ: 
গুরুবাদী সাধক-বাউলদের কাছে গুরু দুটি ৰূপে সেবিত হন। একটি মানুষ-গুরু, অন্যটি ভগবান। এই মানুষ- গুরু, পরম-গুরুর-ই প্রতিনিধি। এই মানুষ-গুরুর প্রতি ভক্তি বা নিষ্ঠা না জাগলে, সর্বোচ্চ গুরু ভগবানের অনুগ্রহ লাভ হয় না।

■ গুরুশিষ্যের সম্পর্ক: 
গুরুশিষ্যের মধ্যে এমন এক বন্ধন জায়মান, যা আর কোথাও পাওয়া সম্ভব নয়। এই মানুষ-গুরুর মধ্যেই ভগবানরূপে পরম সাঁই বা মুরশিদ বিরাজ করেন। অর্থাৎ 'গাথা' থাকেন। গুরুর মধ্যেই 'মনের মানুষ' আলোক- উজ্জ্বল হিসেবে অবস্থান করেন।

প্রশ্ন ১১ 

"দ্বি-দলের মৃণালে সোনার মানুষ উজ্জ্বলে”- 'দ্বি-দলের মৃণাল' এবং 'সোনার মানুষ' বলতে লালন শাহ ফকির কী বুঝিয়েছেন? দ্বি-দলের মৃণালে সোনার মানুষ কী-ভাবে উজ্জ্বলতা পায়, তা বুঝিয়ে দাও। ২+৩=৫


উত্তর:- 
■ আজ্ঞাচক্র: 
'দ্বি-দলের মৃণাল' কথার অর্থ 'আজ্ঞাচক্র'। অর্থাৎ, পিতৃশক্তি ও মাতৃশক্তির মিলনের ফলে, যে আনন্দ- অনুভূতি উৎপন্ন হয়, তা-ই অন্তরাত্মার স্বরূপ উপলব্ধিতে সাহায্য করে। সেই পরম সত্তার প্রকাশ দ্বি-দলের পদ্মে। 'সোনার মানুষ' বলতে ফকির লালন শাহ্ মনের মানুষকে বুঝিয়েছেন।

■ মনের মানুষ আজ্ঞাচক্রে অবস্থান: 
সোনার মানুষ বা মনের মানুষ 'দ্বি-দলের মৃণাল'-এ উজ্জ্বলতা পায়। কেননা, দ্বি- দল মৃণাল বা আজ্ঞাচক্রে পরম বা ভগবান বিরাজমান। সেখানে তাঁর উপস্থিতির উজ্জ্বলতা পুনঃপুন প্রকাশ পায়। সাধক তাই দ্বি-দল মৃণাল ছেড়ে অন্য কোথাও যেতে চান না।

■ পরম-গুরু : 
দ্বি-দলের এই মৃণালে স্বয়ং পরম-গুরু বা সাঁই অবস্থান করেন। তাঁর উপস্থিতিতে সাধক পরম- গুরুর উজ্জ্বল উপস্থিতি অনুভব করতে পারেন। অর্থাৎ মনের মানুষের সন্ধান পান। বাউলের সাধনায় সিদ্ধিলাভের মাধ্যমে সোনার মানুষ উজ্জ্বল হয়ে ওঠেন। সাধক-শিষ্য গুরু- নির্দেশিত উপলব্ধি করতে পারেন পরম সম্পদ গুরু বা মুরশিদের উজ্জ্বল অস্তিত্ব। বস্তুত, পারিভাষিক এইসব শব্দবন্ধ-'দ্বি-দলের মৃণাল'-এর মধ্যে আজ্ঞাচক্র, 'সোনার মানুষ' ইত্যাদি মনের মানুষের উপস্থিতির সন্ধান ও সাধকের উত্তর:-ণে গুরু-নির্দেশনাসমূহের সঙ্গে জড়িয়ে আছে।

প্রশ্ন ১২ 

এমন "এই মানুষে মানুষ গাথা
দেখনা যেমন আলেক লতা"-
'আলেক লতা' শব্দবন্ধের অর্থ কী? লালন শাহ্-এর গানে মানুষ গাথা ও আলেক লতা শব্দ দুটির কোন্ অর্থ ব্যবহৃত হয়েছে তা বুঝিয়ে দাও। ২+৩=৫


উত্তর:- 
■ সাধারণ ও পারিভাষিক অর্থ: 
'লালন শাহ্ ফকিরের গান'-এ 'আলেক লতা' বা স্বর্ণলতার পারিভাষিক অর্থ প্রকৃতি-পুরুষের মিলিত সত্তা। বাউলদের সাধনা সগুরু দেহবাদী সাধনা। এই দেহবাদ এবং গুরুবাদ 'আলেক লতা' শব্দবন্ধটিকে ব্যঞ্জনাগর্ভ করে তুলেছে।

■ দম ও দ্বি-দল পদ্ম: 
প্রকৃতি ও পুরুষ এক হয়ে দ্বি-দল পদ্মে সাধক মানুষ-এর সাক্ষাৎ পায়। 'মনের-মানুষ' দ্বি-দল পদ্মে বিরাজ করেন। চূড়ান্ত পরিণতিতে কুলকুন্ডলিনী মূলাধারে স্থিত হন।

■ কুম্ভক শক্তির সাহায্য: 
গানটিতে 'মানুষ-গাথা' এবং 'আলেক লতা' শব্দ দুটি গভীর ব্যঞ্জনায় ব্যবহৃত পুরো ব্যাপারটাই সাধক, শিষ্য ও মনের মানুষের একই দেহে অবস্থানের প্রেক্ষিতে দেখা হয়েছে। গুরু মনে করেন, বাউল-সাধনায় সিদ্ধি লাভ করতে হলে সাধককে নিজের মধ্যে থাকা এই লীলাময় সহজ মানুষকে ঊর্ধ্বে নিতে হবে। নিতে হবে অলক্ষ বায়ু বা দমের সাহায্য। এই কুম্ভক শক্তির দ্বারা সাধককে আত্ম স্বরূপকে উপলব্ধি করতে হবে।

■ অদৃশ্যতা : 
গানটিতে লালন শাহ্ ফকির 'আলেক লতা' শব্দবন্ধটি প্রতীকী অর্থে ব্যবহার করেছেন। স্বর্ণলতার জন্ম-ইতিহাস যেমন খুঁজে পাওয়া যায় না, তেমনি বায়ুকেও দেখা যায় না। সাধনবায়ুর এই অলক্ষ-অস্তিত্বকে 'আলেক লতা'র প্রতীকে তুলে ধরেছেন। কুম্ভক শক্তির দ্বারা সাধক যখনই আত্মস্বরূপ উপলব্ধি করতে সক্ষম হন, তখনই সম্ভব হয় পরম সত্তার সন্ধান পাওয়া।


প্রশ্ন ১৩ 

"লালন বলে, মানুষ-আকার 
ভজলে তরবি।।"-
উদ্ধৃত অংশটিতে 'মানুষ-আকার' বলতে কী বোঝানো হয়েছে? 'মানুষ-আকার' ভজনার সঙ্গে 'তরবি'-র সম্পর্ক কী আলোচনা করো। ২+৩=৫


উত্তর:-
 'লালন শাহ ফকিরের গান' রচনার অংশটিতে সাধক- শিষ্য ও 'মনের মানুষের' পারস্পরিক সম্পর্ককে বিশেষভাবে বোঝানো হয়েছে। লালন শাহ ফকির মনে করেন সাধক সত্তা গুরু সত্তা একাকার। বাউলদের মধ্যে আত্ম বা নিজেকে উপলব্ধি করার শক্তি-সত্তা আছে। এই শক্তি-সত্তাকে সাধক-গুরু ভগবানের সঙ্গে এক করে দেখেন। কারণ গুরু সাধনার এমন স্তরে উঠে যান, যেখান থেকে তিনি ভগবানকে উপলব্ধি করতে পারেন। আসলে পরম বা ভগবান তাঁর সত্তাকে সাধকের মধ্যে একীভূত করে রাখেন ওই মানব-শরীরে। এই জৈব শরীরই 'মানুষ-আকার'।

■ সাধক সত্তার দুই রূপ:- 
বাউল সাধনা একই সঙ্গে গুরুবাদী ও আত্মসাধনা। বাউলের নিজের শরীরের মধ্যে যে আত্ম-উপলব্ধিময় সত্তা আছে, তার দুটি ভাগ। একটি মানুষ- গুরু, অন্যটি পরম-গুরু। এই মানুষ-গুরু পরম-গুরুরই প্রতিনিধি। তিনি সাধক-শিষ্যকে সাধনার পথের দিশা নির্দেশ করেন। সুষ্ঠু নির্দেশ দিয়ে পরিচালিত করেন। প্রয়োজনে নিজে উপস্থিত থেকে, শাসন করেন, শিষ্যকে ঠিক পথে নিয়ে আসেন।

■ মুরশিদের সন্ধান পাওয়া: 
এই মানুষ-গুরু সাধনার এমন এক স্তরে উন্নীত হন, যেখান থেকে তিনি মনের মানুষ তথা ভগবানকে উপলব্ধি করতে পারেন। এইভাবে মানুষ-আকার ভজনার মধ্য দিয়ে সাধক-বাউল জাতে ওঠেন। পরম সত্তা বা মুরশিদের সন্ধান পান।


প্রশ্ন ১৪ 

লালন শাহ কে ছিলেন? পাঠ্য লালন-গীতিকা অবলম্বনে মূল বিষয়টি ব্যাখ্যা করো। [সংসদ নমুনা প্রশ্নপত্র] ২+৩=৫


উত্তর:- 
■ বাউল সাধক:- 
লালন শাহ ফকির ছিলেন বাউলদের সাধক শিরোমণি। তাঁর জন্ম ও জাতি পরিচয় নিয়ে বিতর্ক আছে। 

■ জন্ম-পরিচয়: 
আনুমানিক ১৭৭৪ খ্রিস্টাব্দে মতান্তরে (১৭৭৫) তিনি জন্মগ্রহণ করেন। জন্মস্থান ভেড়ারা গ্রাম। বাংলাদেশের কুষ্টিয়া জেলার কুমারখালি থানা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল একশো ষোলো বছর। প্রচলিত মতে, তিনি ছিলেন হিন্দু। জনশ্রুতি, তীর্থযাত্রায় বসন্ত রোগে আক্রান্ত হলে সঙ্গীরা তাঁকে ত্যাগ করেন। এক মুসলমান পরিবারের আশ্রয়ে ও শুশ্রুষায় আরোগ্য লাভ করেন। দীক্ষা নেন সিরাজ সাঁইয়ের কাছে।

■ মানুষকে সাধনা: 
লালন-গীতিকার মূল বিষয়টি পারিভাষিক শব্দ ব্যবহার করে তিনি প্রকাশ করেন। তিনি বলেন মানুষকে সাধনা করলে তবেই সোনার মানুষ হওয়া সম্ভব।

■ মুরশিদের অবস্থান: 
সোনার মানুষের সন্ধান সাধকের অন্বিষ্ট। তিনি থাকেন সাধারণ মানবশরীরে। মানুষকে অবজ্ঞা করলে সোনার মানুষের সন্ধান মিলবে না।

■ আজ্ঞাচক্র: 
আজ্ঞাচক্রে মনের মানুষ অবস্থান করেন। তাঁর সন্ধান বিশেষ পথে শিষ্যকে অর্জন করতে হবে। যে দ্বি-দলের মৃণালে মনের মানুষ অবস্থান করেন-সেখানে পৌঁছোনো সহজ নয়। গুরুর কৃপায় সেখানে পৌঁছোনো যেতে পারে।

■ মানবশরীরকে মর্যাদা: 
লালন শাহ্ আরও নির্দেশ দিয়েছেন, খ্যাপা যেন মানব শরীরকে অবমাননা না করেন। মানুষ-গুরুই পরম-গুরুর প্রতিনিধি। আলেক লতার মতো এঁর আদি-অন্ত নেই।

■ মানুষ-গুরুর নির্দেশ পালন: 
মানুষ-গুরুর দেখানো পথে সাধক সিদ্ধিলাভ করবে। অন্যথায় সাধকের পক্ষে কোনোদিনই 'মনের মানুষ'-এর সন্ধান পাওয়া সম্ভব হবে না।



  • একাদশ শ্রেণীর বাংলা চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
  • একাদশ শ্রেণীর বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার চতুর্থ অধ্যায় SAQ
  • একাদশ শ্রেণীর বাংলা নতুন সিলেবাস দ্বিতীয় সেমিস্টার 
  • ক্লাস 11 বাংলা চতুর্থ অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর
  • Class 11 Bengali New syllabus in bengali west bengal board
  • Class 11 2nd semester Bengali New syllabus WB


একাদশ শ্রেণী বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার, চতুর্থ অধ্যায়, লালন শাহ ফকিরের গান - লালন শাহ প্রশ্ন উত্তর | Class 11, 2nd semester, Fourth Chapter Lalon sha fokirer gan Questions and Answers | Class XI, Semester II, Bengali, Fourth Chapter Questions and Answers 


Post a Comment

0 Comments

Top Post Ad

Bottom Post Ad

Show ad in Posts/Pages