একাদশ শ্রেণী বাংলা দ্বিতীয় সেমিস্টার, আজব শহর কলকেতা - সৈয়দ মুজতবা আলী প্রশ্ন উত্তর | Class 11, 1st semester Bengali, । WBCHSE । Ajob Sohor Kolketa - Soyed Mujtaba Ali
শিক্ষার্থী বন্ধুরা আজকে আমরা আলোচনা করবো একাদশ শ্রেণীর বাংলা বিষয়ের আজব শহর কলকেতা - সৈয়দ মুজতবা আলী নিয়ে। আশাকরি তোমরা একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টারের এই আজব শহর কলকেতা - সৈয়দ মুজতবা আলী অধ্যায়টি থেকে যেসব প্রশ্ন দেওয়া আছে তা কমন পেয়ে যাবে। আমরা এখানে একাদশ শ্রেণীর, দ্বিতীয় সেমিস্টারের বাংলা বিষয়ের আজব শহর কলকেতা - সৈয়দ মুজতবা আলী এর SAQ, শূন্যস্থান পূরণ, এক কথায় উত্তর দাও, Descriptive, ব্যাখ্যা মুলক প্রশ্নোত্তর , সংক্ষিপ্ত নোট এগুলি দিয়েছি। এর পরেও তোমাদের এই আজব শহর কলকেতা - সৈয়দ মুজতবা আলী অধ্যায়টি থেকে কোন অসুবিধা থাকলে, তোমরা আমাদের টেলিগ্রাম, হোয়াটসাপ , ও ইউটিউব চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব করে রাখতে পারো ।
আজব শহর কলকেতা - সৈয়দ মুজতবা আলী অধ্যায়ের সকল প্রশ্ন ও উত্তর
অনধিক একশো পঞ্চাশ শব্দে উত্তর দাও।
প্রতিটি প্রশ্নের মান- ৫
প্রশ্ন ১
"তার পরিচয় বইখানাতে আছে।”- কীসের পরিচয়? বইখানার বিশেষত্ব কোথায়?
২+৩=৫
উত্তর:-
বিখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী 'পঞ্চতন্ত্র' গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধ থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশে প্রাবন্ধিক ফরাসি বইয়ের দোকানে বই নাড়াচাড়া করতে করতে যে খাসা একটা বই পেয়েছিলেন, তার কথা বলা হয়েছে। এই বইতে ন্যুরনবর্গের মোকদ্দমা থেকে প্রাপ্ত দলিল- দস্তাবেজের ওপর ভিত্তি করে হিটলার সম্বন্ধে ফরাসিদের মনোভাবসমৃদ্ধ হিটলার চরিত্রের পরিচয় আছে।
◇ বইটির বিশেষত্ব হল-এই বইয়ের কেন্দ্রে রয়েছেন হিটলার। ন্যুরনবর্গের মোকদ্দমায় যে-সমস্ত দলিল-দস্তাবেজ পাওয়া গিয়েছিল, তাই দিয়েই গড়া হয়েছে এই বইয়ের হিটলার চরিত্রবর্ণন। আসলে ইতিহাসের এরকম এক দুর্ধর্ষ ব্যক্তিত্বকে নিয়ে আলোচনাটাই তো বিশিষ্ট আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ-জার্মান-ফ্রান্স-সহ সারাবিশ্ব হিটলার গাথায় চমকিত।
হিটলার মানেই বীভৎসতার আর-এক নাম। ন্যুরনবার্গ মোকদ্দমায় জার্মানিদের আক্রমণাত্মক যুদ্ধের ষড়যন্ত্র ও পরিচালনার অপরাধকে 'সর্বোচ্চ আন্তর্জাতিক অপরাধ' বলে - ঘাষণা করেছিল। কারণ "এতে সমগ্রের পুঞ্জীভূত মন্দতা রয়েছে।" সমগ্র বিশ্বের কাছে তাই এই বইয়ের বিশেষত্ব হল- অন্যায়, অপরাধ, মানবিকতার হত্যা সভ্যতার লজ্জা হিসেবেই বিবেচিত, এই বই তারই একটা প্রধান প্রামাণ্য দলিল।
প্রশ্ন ২
"এমন সময় সপ্রমাণ হয়ে গেল।”-কখন, কী প্রমাণ হয়ে গেল? ৫
উত্তর:-
প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর 'পঞ্চতন্ত্র' নামক গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা' থেকে উদ্ধৃতাংশটি নেওয়া হয়েছে। লেখক যখন ছোটোবেলা থেকে শুনে-আসা 'আজব শহর কলকেতা'কে নিয়ে একটি প্রামাণিক প্রবন্ধ লেখার কথা মনস্থির করেছেন তখন জোর বৃষ্টি নামল। এখানে সেই বৃষ্টি নামার সময়ের কথা বলা হয়েছে। এদিকে ছাতা বা বর্ষাতি কোনোটাই নেই। আবার ট্রামে চড়বার মতো তাগদও নেই। বাসে ওঠা তো দূরে থাক আবার ট্যাক্সি চড়তে গেলে এত পয়সা লাগে যে বুক চড় চড় করে। ঠিক এমন সময় বাড়ি ফেরার চিন্তাটা পথ হারানোর মতো হল এবং সামনে একটা সাইনবোর্ড দেখলেন, 'ফ্রেঞ্চ বুক শপ'-সেই সময়ের কথা বলা হয়েছে।
লেখকের এতদিনকার বাসনা প্রামাণিক প্রবন্ধ লিখবেন কলকাতা শহরের আজব বৈশিষ্ট্য নিয়ে। চোখে পড়ল 'ফ্রেঞ্জ বুক শপ' সাইনবোর্ড-অর্থাৎ ফরাসি বইয়ের দোকান। খোদ কলকাতার বুকে ফরাসি বইয়ের দোকান-সত্যিই আজব বটে! বাংলা-ইংরেজি-হিন্দি ভাষায় লেখা বইয়ের বিক্রির দোকান থাকা স্বাভাবিক। তা না, একেবারে কেবল ফরাসি ভাষার বই বিক্রির দোকান-এ সত্যি আজব!
প্রশ্ন ৩
'আজব শহর কলকেতা'য় ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে লেখকের কীরূপ ভাবের উদয় হয়েছিল? দোকানের ভিতরে ঢুকে লেখক কীরূপ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করলেন? [সংসদ প্রদত্ত নমুনা প্রশ্ন] ২+৩=৫
উত্তর:-
বিখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী 'পঞ্চতন্ত্র' গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা'য় ফরাসি বই-এর দোকান দেখে প্রথমেই মনে করেছিলেন-নিশ্চয়ই কোনো ফরাসি, পথ হারিয়ে কলকাতায় এসে পড়েছিল। আবার তার মধ্যে ট্যাঁকে যে দুটি পয়সা আছে তা খোয়াবার জন্য ফরাসি বইয়ের দোকান খুলে বসেছে। তিনি আরও ভেবেছিলেন যে এই খোদ কলকাতার ভিতর 'ফ্রেঞ্চ বুক শপ' অর্থাৎ কেবল ফরাসি বই বিক্রির দোকান-এ অনেকটা হাতির দাঁতের মতো। অর্থাৎ হাতির বাইরের দাঁতের মতো এই দোকানেরও সামনে কিছুটা ফ্রেঞ্চ বা ফরাসি বই পাওয়া যেতে পারে কিন্তু হাতির ভিতরে লুকোনো দাঁতের মতো হয়তো বা 'খুশবাই' বা 'সাঁঝের পীর'-এর মতো বই বিক্রির ব্যবস্থা আছে।
দোকানের ভিতরে ঢুকে তিনি প্রত্যক্ষ করলেন যে, সত্যি সত্যিই কেবল ফরাসি বই-ই পাওয়া যায় ওখানে। এমনকি সিজিল অনুযায়ী বাঙালি দোকানদারের মতো বইগুলি সাজানো। ওই দোকানের মালকিনের বান্ধবী কেবল নিজের মাতৃভাষাকে ভালোবেসে দেশপ্রেমকে বুকের মাঝে লালন করে সাতসমুদ্র তেরো নদী পারে ভারতের কলকাতায় এসে বসেছেন। এটা একটা দেশের পক্ষে বা জাতির পক্ষে স্বার্থত্যাগের অনবদ্য রূপায়ণ। এই প্রসঙ্গে প্রাবন্ধিক তুলসীদাসের বক্তব্য উদ্ধৃতি করে বলেছিলেন-পৃথিবীর অদ্ভুত রীতি শুঁড়ি দোকানে বসে থাকে আর সবাই সেখানে মদ কিনতে যায়, আর দুর্ভাগ্যের বিষয় দুধওয়ালাকে প্রত্যেকের ঘর ঘরে দুধ বিক্রির জন্য পৌঁছোতে হয়।
প্রশ্ন ৪
"তাই আন্দাজ করলুম।"-কে, কী আন্দাজ করলেন? এরকম আন্দাজের কারণ কী?
৩+২=৫
উত্তর:-
প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক মুজতবা আলীর 'পঞ্চতন্ত্র' গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধ থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশে প্রাবন্ধিক নিজেই আন্দাজ করলেন ফরাসি বইয়ের দোকান দেখে। তিনি আন্দাজ করলেন যে, 'ফ্রেঞ্চ বুক শপ' বোধহয় হাতির দাঁতের মতো। হাতির সামনে বেরিয়ে থাকা দুটি দাঁতের মতো হয়তো সামনে অল্প কিছু ফরাসি বই সাজানো থাকবে। আর হাতির ভিতরে লুকোনো দাঁতের মতো দোকানের ভিতরে হয়তো পাওয়া যাবে অন্যতর কিছু বই। যেমন, 'খুশবাই', 'সাঁঝের পার', 'লোরেণু', 'ওষ্ঠ-রাগ' ইত্যাদি গ্রন্থনাম সংবলিত বই, যার সাহিত্যগুণ কম কিন্তু বিক্রি অনেক বেশি।
লেখকের এরকম আন্দাজের কারণ হল, খোদ কলকাতার বুকে অনেক দোকান আছে, যা বাইরের দিক থেকে হয়তো চায়ের দোকান, কিন্তু ভিতরে গোপনে নিষিদ্ধ দ্রব্য বিক্রি হয়। তা যেন হাতির দাঁতের মতো-বাইরের দুটি বেরিয়ে থাকা মুলোর মতো দাঁত যা আসলে শোভা, আর খাওয়া তথা চিবানোর কাজটি করে ভিতরের দাঁত। খোদ কলকাতার বুকে কেবল ফরাসি বই বিক্রির কথা শুনে বা দেখে এরকম আন্দাজই হওয়া স্বাভাবিক।
প্রশ্ন ৫
"মেমসাহেবও বুড়ো রাজা প্রতাপ রায়ের মত।"- প্রাবন্ধিকের এ কথা বলার কারণ কী? ৫
উত্তর:-
প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক মুজতবা আলীর 'পঞ্চতন্ত্র' গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধ থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশে প্রাবন্ধিক রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'গানভঙ্গ' কবিতার অনুসরণে বুড়ো রাজা প্রতাপ রায়ের প্রসঙ্গ এনেছেন। কবিতায় যেমন যুবা কাশীনাথের জায়গায় বরজলালের গান বেশি করে শুনতে চেয়েছিলেন রাজা প্রতাপ রায়, তেমনি প্রবন্ধেও প্রাবন্ধিক যখন ইমনকল্যাণ সুর ধরলেন অর্থাৎ ফরাসি ভাষায় কথা শুরু করলেন তখন রাজা প্রতাপ রায়ের মতো ফরাসি মেমসাহেব তাঁর ফরাসি ভাষা শুনে প্রাবন্ধিকের প্রশস্তি করতে লাগলেন। গলা ছেড়ে গান গাওয়ার অনুরোধে রাজা প্রতাপ রায় যেমন করেছিলেন তেমনি প্রাবন্ধিকের কণ্ঠে ফরাসি কথা শুনে আরও বেশি ফরাসি বলার জন্য উৎসাহ দিতে থাকলেন তিনি। 'কী আনন্দ কী আনন্দ' বলে কেবল উৎসাহ দেওয়া নয়, প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলীর প্রশংসায়ও পঞ্চমুখ হয়ে উঠলেন। ফরাসি জাতটার একটা বিশেষ গুণ হল কারোর হাজারও দোষের মধ্যে যদি একটা কিছু ভালো বা গুণের সন্ধান পায়, তাহলে তাকে প্রশংসায় ভরিয়ে দেয়। মেমসাহেব ও বুড়ো রাজা প্রতাপ রায়ের মতো লেখকের ফরাসি বলতে পারার প্রশংসায় পঞ্চমুখ হয়ে ব্যক্তিগত সুখ দুঃখের কথাও বলে ফেললেন।
প্রশ্ন ৬
"বলতে গেলে আমার অবস্থা ডডনং হয়ে দাঁড়ায়।"-
ডডনং বলতে কী বোঝো? লেখক কোন্ প্রসঙ্গে এই কথার অবতারণা করেছেন? ২+৩=৫
উত্তর:-
প্রখ্যাত সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলীর 'পঞ্চতন্ত্র' গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধ থেকে উদ্ধৃতাংশে 'ডডনং' শব্দটির আক্ষরিত অর্থ হল নির্বোধ বা মূর্খ। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যদি কোনো বিষয়ে না জানেন এবং কাজ চালানোর মতো প্রয়াস করেন, তখন এই 'ডডনং' পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। অঙ্কের '৬৬নং' থেকেই আকৃতিগত সাদৃশ্য নিয়ে বাংলায় 'ডডনং'-এর উৎপত্তি। উদাহরণস্বরূপ বলা যেতে পারে-যত পথ তত মত। কেউ এটা পড়তে পারেন য তিন পথ তিন তিন ম তিন। এখান 'ত' বর্ণটি আকৃতিগত সাদৃশ্যে ৩ এর সঙ্গে তুলনীয়। অর্থাৎ এখানে মূল বিষয়টি জানা না- থাকলে তার মতো করে কোনোরকমে কাজ চালিয়ে নেওয়ার বিষয়টিকে প্রাবন্ধিক তুলে ধরেছেন।
প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী যখন ফরাসি বইয়ের দোকানে মেমসাহেবের সঙ্গে কথোপকথন সূত্রে ভাঙা ভাঙা ফরাসিতে কাজ চালানোর মতো কথা বলার চেষ্টা করছেন তখন এই 'ডডনং' এর প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয়েছে। এই প্রসঙ্গে লেখকের এইরকম ইতিবাচক ভাবনা ছিল যে, ফরাসি মেমসাহেব যদি কলকাতার বুকে বসে বাংলা-ইংরেজি কোনোটাই ভালোভাবে বলতে না পেরে কাজ চালাতে পারেন, তাহলে তিনিও ফ্রান্স থেকে হাজারও মাইল দূরে দাঁড়িয়ে 'টুটি ফুটি' ফরাসি তথা কোনোরকমে কাজ চালানোর মতো ফরাসি বললে মহাভারত বা বাইবেল অশুদ্ধ যাবে না।
প্রশ্ন ৭
"নাঃ আজব শহর কলকেতাই বটে।”-লেখকের এমন বলার কারণ কী? ৫
উত্তর:-
বিখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী 'পঞ্চতন্ত্র' গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধে এমন ধরনের মন্তব্য করেছেন। লেখক প্রথমে খোদ কলকাতা শহরের বুকে 'ফ্রেঞ্চ বুক শপ' অর্থাৎ ফরাসি বইয়ের দোকান- নাম দেখে মনে ভেবেছিলেন, হয়তো এই দোকানের বাইরে কয়েকটি ফরাসি বই থাকবে ভিতরে থাকবে রদ্দি উপন্যাস বা 'খুশবাই', 'সাঁঝের পার' এর মতো কোনো বই।
কিন্তু বইয়ের দোকানে ভিতরে ঢুকে তাজ্জব বনে গেলেন লেখক। দেখলেন, বই বিক্রেতা কেবল ফরাসি বই বেচেই পয়সা কমাতে চায়। গাদা গাদা সাদা আর হলুদ মলাটওয়ালা প্রচুর ফরাসি বই। কিছু সাজানো-গোছানো, আর কিছু যেখানে-সেখানে ছড়ানো। ফ্রান্স থেকে কলকাতায় এসে দোকানদার বাঙালি হয়ে গেছে। বাঙালি দোকানদারের মতোই বইগুলি সাজিয়েছে টাইপরাইটারের হরফের মতো করে। অর্থাৎ এই সিজিলটা যার জানা আছে তার পক্ষে যে-কোনো বই ওই ভিড়ের মধ্য থেকে বার করা কোনো ব্যাপার নয়। আর যার জানা নেই, লেখকের মতে তার কোমর ভেঙে তিন টুকরো হয়ে যাবে। যাইহোক লেখক বইয়ের দোকানে ঢুকে সত্যি- সত্যিই উপলব্ধি করতে পারলেন, কেন কলকাতা শহরকে আজব শহর বলা হয়।
প্রশ্ন ৮
"সাহিত্যের প্রচার কামনায় দোকানে বসেছেন।"-কে, কোন্ দোকানে বসেছেন? প্রাবন্ধিকের এ কথা বলার উদ্দেশ্য কী?
২+৩=৫
উত্তর:-
প্রখ্যাত বাঙালি সাহিত্যিক মুজতবা আলীর 'পঞ্চতন্ত্র' গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধ থেকে নেওয়া উদ্ধৃতাংশে এক ফরাসি দোকানদারের বান্ধবী তার বইয়ের দোকানে বসেছেন।
প্রাবন্ধিকের এ কথা বলার উদ্দেশ্য হল-কেবল ফরাসি ভাষা ও সাহিত্যের প্রচার কামনায় তিনি দোকানে বসেছেন। একজন মানুষের দেশের প্রতি এবং দেশের ভাষার প্রতি কতটা শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা থাকলে এমন হাজার মাইল দূরে কোনো দোকানে এসে বসতে পারেন! মাতৃভাষার প্রতি এত গভীর টান সত্যিই পাঠককুলকে শিক্ষা দিয়ে যায়। যেখানে ভাষার প্রতিকূলতা, উপার্জনের অনিশ্চয়তা রয়েছে, সেখানে এমন স্বার্থত্যাগ প্রাবন্ধিক চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন। কেবল স্বার্থত্যাগ নয়, মাতৃভাষার প্রতি অসীম মমত্ববোধ ও দায়বদ্ধতার সংমিশ্রণ ছিল বলেই লেখকের যে যে বই লাগবে সেগুলি মেমসাহেব টুকে নিলেন এবং বই • আসামাত্রই তাঁকে খবর দিয়ে দেবেন-এমন ভরসার কথা দৃঢ় চিত্তে দিলেন। সুতরাং উপার্জনের পাশাপাশি নিজের মাতৃভাষায় লেখা সাহিত্যের প্রচার এবং ভাষার প্রচার করে এক প্রকার স্বদেশপ্রীতির পরিচয় রাখলেন মেমসাহেব।
প্রশ্ন ৯
কোন্ প্রসঙ্গে 'ফরাসি রাজদূত মসিয়ো ফ্রাঁসোয়া পঁসে'-এর নাম উচ্চারিত হল? তাঁর সম্বন্ধে সংক্ষিপ্ত টীকা লেখো।
৩+২=৫
উত্তর:-
বিখ্যাত প্রাবন্ধিক সৈয়দ মুজতবা আলী 'পঞ্চতন্ত্র' গ্রন্থের অন্তর্গত 'আজব শহর কলকেতা' প্রবন্ধে কোলকাতায় ফরাসি বইয়ের দোকানে ঢুকে কথোপকথনের শুরুতেই বইবিক্রেতা মেমসাহেব ফরাসিতে 'আপনার আনন্দ কিসে' বললে বেশ বেকায়দায় পড়ে যান। কারণ প্রথম যৌবনে শেখা ফরাসি ভাষা জীবনের এই প্রান্তবেলায় এসে তিনি অনেকটাই ভুলে গেছেন। জার্মান ভাষায় প্রেমের গান মুখে 'না' ও মনে হ্যাঁ-এর কথা মনে এলেও তিনি বলতে পারেননি। কারণ ফরাসি জার্মানদের জাত শত্রু। এমন সময় প্রাবন্ধিক ফরাসি রাজদূত মসিয়ো ফ্রাঁসোয়ার নাম উচ্চারণ করেন এবং এই প্রসঙ্গসূত্রে ফরাসিতে বাক্যালাপ শুরু হয়।
◇ ফরাসি রাজদূত মসিয়ো ফ্রাঁসোয়া ছিলেন একজন ইতিহাসিবখ্যাত রাজদূত এবং চিকিৎসকও বটে। ভারতবর্ষে অবস্থানকালে তিনি মুঘল সম্রাট শাহজাহানের জ্যেষ্ঠ পুত্র দারা শিকোহ-র ব্যক্তিগত চিকিৎসক ছিলেন। ভারতবর্ষে তিনি প্রায় বারো বছর ছিলেন। দারা-র মৃত্যুর পর তিনি মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের দরবারে বেশ কিছুদিন অবস্থান করেন। তাঁর জন্ম হয় ১৬২০ খ্রিস্টাব্দের ২৫ সেপ্টেম্বর এবং মৃত্যু হয় ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দের ২২ সেপ্টেম্বর।